সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছে হাটহাজারী মাদরাসা
প্রকাশ:
০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৬:১২ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
কথিত নামধারী সুন্নী ও জসনে জুলুস অনুসারী কর্তৃক দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক কটূক্তি, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি এবং শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর কবরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, জামিয়ার ছাত্রদের ওপর সশস্ত্র হামলা এবং দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মাদরাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতি খলীল আহমদ কাসেমীসহ সিনিয়র উস্তাদরা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ! পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল ভোর থেকেই মাদ্রাসার সকল গেট বন্ধ করে দিয়ে গেটে গেটে কড়া পাহারা বসানো হয় এবং মাদ্রাসার কোন ছাত্রকে বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। এতে আমাদের আশা ছিল, কথিত নামধারী সুন্নীরাও সংযত থেকে দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসা এরিয়া অতিক্রম করবে। তাছাড়া, আমরা হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনকেও অবগত করেছিলাম, যাতে অন্যান্য বছরের মতো হাটহাজারী মাদ্রাসা এরিয়ার উত্তর ও দক্ষিণ অংশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে জুলুসযাত্রীদেরকে মাইকে বাদ্য-বাজনা করতে নিষেধ করে। কিন্তু ফটিকছড়িসহ উত্তর চট্টগ্রামের নামধারী সুন্নীরা চট্টগ্রাম মহানগরীতে কথিত ঈদে মিলাদুন্নবী ও জলুস উদযাপনের লক্ষে গতকাল সকাল ৭টা থেকে শত শত গাড়ি নিয়ে যাওয়ার পথে হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে বিকট শব্দে মাইকে গান-বাজনা, উস্কানীমূলক স্লোগান, অশ্লীল নৃত্য ও কটুক্তিমূলক আচরণ এবং দৃষ্টিকটু অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে উস্কানী দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলে। এই সময়ে তারা শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও কাষেদে মিল্লাত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (রাহ.) এর কবরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, যেখানে বাধা দিতে গিয়ে কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। এছাড়া তারা জামিয়ার শতবর্ষী বাইতুল কারীম জামে মসজিদের দিকে অশালীন ভঙ্গিমায় ইশারা করার মত ধৃষ্টতা দেখায়। এমনকি মজিদের আযান এবং জামাআত চলাকালীন সময়েও তাদের বাদ্য-বাজনা ও স্লোগান সমানতালে জারি রাখে। তাদের উস্কানির মাত্রা বাড়তে থাকলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ থেকে বারংবার অনুরোধ করা হলে দুপুরের পর ২/৩ জায়গায় কিছু পুলিশ মোতায়েন করা হলেও তারা উস্কানী বন্ধে সমর্থ হয়নি। উল্লেখ্য, ইশার নামাযের আগে যখন জুলুসের একাধিক গাড়ি থেকে পথচারীদেরকে উদ্যেশ্য করে ওহাবী ইত্যাদি বলে কটাক্ষ করার চেষ্টা করে, তখন আশেপাশের পথচারীরা তাদের এসব উস্কানীর কড়া প্রতিবাদ করে জানায় যে, তোমরা বিশৃঙ্খলা করতে চাও কেন, তখন পর্যন্তও মাদ্রাসার গেট সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ! রাত আনুমানিক একটার সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমান হাটহাজারী মাদরাসার অবস্থা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি। আলহামদুলিল্লাহ, হাটহাজারী মাদরাসার কোনো ছাত্র গতকালের ঘটনায় নিহত হননি। তবে ত্রিশ-পঁয়ত্রিশজন ছাত্র এখনো গুরুতর আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন। প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ। হাটহাজারী মাদ্রাসার বায়তুল করীম জামে মসজিদের প্রতি অশ্লীল ইঙ্গিত ও উক্তিকারী ফটিকছড়ির আরিয়ান রায়হানের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির দাবি জানাই। একই সাথে সরকারকে গতকালকের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আহত মাদ্রাসা ছাত্রদের যথাযথ চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি। রবিউল আউয়ালকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের মতো গতকাল প্রশাসনিক যথাযথ উদ্যোগে গাফলতি এবং রাতের অন্ধকারে ছাত্রদের উপর হামলাকারীদের প্রতিহত করতে কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ার ঘটনাকে পূর্ণ তদন্ত করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনরি দায়ী সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে আগামীতে রবিউল আউয়ালের কথিত জুলুস, উরশসহ মাজারের কোন গাড়ি যাতে মাদ্রাসা এরিয়াতে যাতে গান-বাজনা ও স্লোগান দিতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানাই। সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা! এমএইচ/ |