জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলা ও পিলখানা এড়িয়ে যাওয়া ইতিহাসের প্রতি বৈষম্য: পীর সাহেব চরমোনাই
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:১০ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন তাতে শাপলা চত্বরে হত্যা এবং পিলখানা হত্যার প্রসঙ্গ না থাকায় নানা মহল থেকে সমালোচনা হচ্ছে। এবার এই ইস্যুতে জুলাই ঘোষণাপত্রের সমালোচনা করলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। এটাকে ইতিহাসের প্রতি বৈষম্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। 

বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

মুফতি রেজাউল করীম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র  নিয়ে আমাদের প্রথম পর্যাবেক্ষণ হলো, ঘোষণার আগে এটা আমরা দেখি নাই। জাতির এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল উপস্থাপনার আগে থেকে না জেনে উপস্থিত থেকে তাতে সমর্থন জানাতে হয়েছে এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর ছিল। তারপরেও প্রত্যাশিত দিনে জুলাই  ঘোষণাপত্র পঠিত হয়েছে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ।

তিনি বলেন, তবে জুলাই ঘোষণাপত্রে ৭১, ৭৫ এর সাত নভেম্বর ও ৯০ এর আন্দোলন সহ দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের কথা উল্লেখ করা হলেও আমাদের স্বাধীনতার প্রথম অধ্যায় ৪৭ এবং পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের সবচেয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ড শাপলা হত্যাকাণ্ড, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও আলেম-উলামাদের প্রতি নির্যাতন-নিপীড়নের কথা উল্লেখ না করে ইতিহাসের তাৎপর্যপূর্ণ অংশ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন মনে করে, এতে ইতিহাসের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে।

ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ঘোষণাপত্রের বিভিন্ন ধারায় হাসিনা ও আওয়ামী অপকর্মের উল্লেখ আছে। ১৭তম ধারায় জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের উল্লেখ আছে। কিন্তু কোথায়ও ফ্যাসিবাদের দোসর রাজনৈতিক, সামাজিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক শক্তির উল্লেখ নাই। ইসলামী আন্দোলন মনে করে এটা ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের পথ খুলে দেবে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ঘোষণাপত্রের ধারা ১৯ এ রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট মোকাবিলায় গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রত্যয় ও প্রয়োগের রাজনৈতিক ও আইনি বৈধতা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উল্লেখ করা হলেও ধারা ২৫ এ জনতা ও তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আইনের শাসন, মানবাধিকার, দুর্নীতি, শোষণমুক্ত  বৈষম্যহীন ও মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারকে পরবর্তী জাতীয় সংসদের ওপরে ন্যস্ত করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে এর মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের মর্যাদা ও সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। একই সাথে ধারা ২৭ এ জুলাই অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতিকে ‘উপযুক্ত’ শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে আপেক্ষিক করে পরবর্তী সরকারের ওপরে ন্যস্ত করে অনিশ্চয়তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে।

এমএইচ/