‘সরকারের স্বীকৃতি জুলাই আন্দোলনে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখবে’
প্রকাশ: ২৩ জুলাই, ২০২৫, ০৩:১৫ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে দেশজুড়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। আন্দোলনের প্রতিটি পর্বে তারা সাহসিকতা, দৃঢ়তা ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তবে আন্দোলনের এক বছর না পেরোতেই কিছু কথিত বুদ্ধিজীবী মাদরাসা শিক্ষার্থীদের এই অবদান অস্বীকার করতে শুরু করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে সরকার ২১ জুলাইকে ‘মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স ডে’ হিসেবে পালন করে। যেখানে  রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষার্থীদের এই অবদানকে স্মরণ ও সম্মান জানানো হয়। যদিও এখন পর্যন্ত এটি মৌখিক স্বীকৃতিতেই সীমাবদ্ধ, তবু মাদরাসা শিক্ষার্থীরা এটিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন এবং সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এই প্রসঙ্গে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সম্মুখযোদ্ধা, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মোল্লা খালিদ সাইফুল্লাহ আওয়ার ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোহাম্মাদ হুজাইফা।
 
আওয়ার ইসলাম: আপনি একজন সক্রিয় জুলাই যোদ্ধা ও আলেম। মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স ডে নিয়ে আপনার অনুভূতি কেমন? 

মোল্লা খালিদ সাইফুল্লাহ: শুরু থেকেই আমরা এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিই। বিশেষ করে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আমরা প্রতিদিন মাঠে ছিলাম। অতীতের কোনো আন্দোলনে মাদরাসার অবদান স্বীকৃতি পায়নি। এবার ‘মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স ডে’ ঘোষণার মাধ্যমে সরকার মৌখিকভাবে হলেও আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছে, এটি অবশ্যই আমাদের জন্য আনন্দের।

তবে আমি মনে করি, ২১ জুলাইকে সরকার যদি আনুষ্ঠানিকভাবে মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স ডে হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রতি বছর পালন করে, তাহলে তা হবে আরও গৌরবের বিষয়। এতে আমাদের আত্মত্যাগ স্মরণীয় হয়ে থাকবে, কেউ ইতিহাস বিকৃতিও করতে পারবে না। মানুষ বুঝবে, মাদরাসা সবসময়ই জালেমের বিরুদ্ধে এবং মজলুমের পাশে থাকে। আমি চাই, এই মৌখিক স্বীকৃতির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হোক। 

আওয়ার ইসলাম: যে স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আপনারা লড়েছিলেন, তা কি পূরণ হচ্ছে বলে মনে করেন? এই সরকারের আচরণ কেমন মনে হচ্ছে?

মোল্লা খালিদ সাইফুল্লাহ: যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম তার পূর্ণ প্রতিফলন ঘটছে না। এজন্য আমরা কিছুটা হতাশ। আরও হতাশার কথা হলো বর্তমান সরকার পশ্চিমা দেশগুলোর এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। এটা খুবই দুঃখজনক। এই আচরণ জুলাই আন্দোলনের চেতনার সম্পূর্ণ বিপরীত। 

আওয়ার ইসলাম: গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে ইসলামি রাজনীতির সুযোগ কতটা বিস্তৃত বলে মনে করছেন? 

মোল্লা খালিদ সাইফুল্লাহ: জুলাই আন্দোলনের পর ইসলামি রাজনীতির জন্য অনেক বেশি সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেছে। যা আগে আওয়ামী লীগের শাসনামলে কল্পনাও করা যেত না, এখন তা বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে। ইসলামী রাজনীতির প্রতি মানুষের আগ্রহ ও প্রত্যাশা বেড়েছে। এই সময়ে যদি আমরা শক্তিশালী নেতৃত্ব দিতে পারি, ইনশাআল্লাহ আমরা জাতিকে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে পারব।

এমএইচ/