কুরআনের মহব্বত থেকেই আমার রাজনীতিতে আসা: শায়খ নেছার আহমদ
প্রকাশ:
০৩ জুলাই, ২০২৫, ০৯:৫৫ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
বাংলাদেশের একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হাফেজ ও ক্বারী, শায়খ নেছার আহমদ। দুই যুগের বেশি সময় ধরে তিনি কুরআনের খেদমতে আত্মনিয়োগ করেছেন। ঢাকার যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ সারা দেশে রয়েছে তার হাফেজ গড়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সারা বিশ্বের বিভিন্ন কুরআন প্রতিযোগিতায় তিনি বাংলাদেশের হাফেজদের চ্যাম্পিয়ন করে তুলেছেন, বিশ্বমঞ্চে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। এবার তিনি সরাসরি রাজনীতির ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছেন। কী তার অনুপ্রেরণা, উদ্দেশ্য ও রাজনৈতিক লক্ষ্য- তা নিয়ে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের বিশেষ প্রতিবেদক কাজী ইনজামামুল হক -এর সঙ্গে। ইনজামামুল হক: আপনি কুরআনের শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। হঠাৎ রাজনীতিতে আগ্রহী হলেন কেন? শায়খ নেছার আহমদ: “আপনারা জানেন যে, প্রায় দুই যুগ যাবৎ আমি পবিত্র কুরআনের খেদমত করছি আলহামদুলিল্লাহ। বাংলাদেশের হাফেজদেরকে সারাবিশ্বের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন করেছি। দেশের সুনাম সারাবিশ্বে তুলে ধরেছি। দীর্ঘদিন কুরআনের খেদমত করতে গিয়ে আমার একটি উপলব্ধি হয়েছে—এদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে আল্লাহর দ্বীন ও রাসূল সা: এর দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। কুরআনের মহব্বত থেকেই আমার রাজনীতিতে আসা। আমি চাই, কুরআনের রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনীতি ও ন্যায়ভিত্তিক শাসন এই ভূখণ্ডে প্রতিষ্ঠিত হোক।” ইনজামামুল হক: ইসলামী দল তো আরও আছে, ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিলেন কেন? শায়খ নেছার: “স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশের আলেমগণ রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। হাফেজ্জি হুজুর রহ., ফজলুল করিম রহ., আজিজুল হক রহ. ও মুফতি আমিনী রহ. সহ সকল বর্ষীয়ান আলেমদের আমি শ্রদ্ধা করি। বর্তমানেও বিভিন্ন ইসলামি দলে আলেমরা কাজ করছেন, আমি সবার প্রতিই শ্রদ্ধাশীল। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে দুজন মহামানবের ভালোবাসার ঋণে আবদ্ধ—পীর সাহেব চরমোনাই ও শায়খে চরমোনাই। তাঁদের যে স্নেহ ও দিকনির্দেশনা পেয়েছি, তা-ই আমাকে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছে।” ইনজামামুল হক: আপনি কি হাতপাখা প্রতীকে নির্বাচন করবেন? কোন আসন থেকে? শায়খ নেছার: “আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন, অর্থাৎ আশুগঞ্জ-সরাইল এলাকা থেকে হাতপাখা প্রতীকে নির্বাচন করব। এই অঞ্চল আলেম-উলামাদের এলাকা, ইসলামের জন্য এক উর্বর জমিন। এখানকার প্রতিটি মানুষ আমার আপনজন। আল্লাহ যদি আমাকে বিজয় দান করেন, তাহলে আমি গরিব-দুঃখী, মেহনতী সাধারণ মানুষের পাশে থাকব সবসময় ইনশাআল্লাহ।” ইনজামামুল হক: বিজয়ের ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী? শায়খ নেছার: “দীর্ঘ দুই যুগ ধরে কুরআনের খেদমত করে যাচ্ছি। গত বছর মক্কায় ১২৩টি দেশকে হারিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছি। এই অভিজ্ঞতা ও জনসাধারণের ভালোবাসাই আমার শক্তি। আমি বিশ্বাস করি, কুরআনের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারলে মানুষ অবশ্যই আমাকে ও আমাদের দলকে গ্রহণ করবে। যদি ১২৩টি দেশকে পরাজিত করতে পারি, তাহলে আশুগঞ্জ-সরাইলেও ইনশাআল্লাহ হাতপাখার বিজয় নিশ্চিত হবে।” শায়খ নেছার আহমদের রাজনীতিতে আগমন শুধু একজন আলেমের প্রার্থিতা নয়- বরং এটি একজন কুরআনি আন্দোলনের ধারক ও বাহকের ময়দানে নামা। তার অভিজ্ঞতা, কুরআনের প্রতি ভালোবাসা ও সাধারণ মানুষের জন্য ভাবনা রাজনীতিতে নতুন গতি আনতে পারে। এখন দেখার পালা- ভোটের বাক্সে কতটা প্রতিফলন ঘটে তার এই আহ্বানের। এমএইচ/ |