মহররম-আশুরার শিক্ষা ও ইতিহাস
প্রকাশ:
০৩ জুলাই, ২০২৫, ০৬:১৬ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
আল আমীন বিন সাবের আলী কালের প্রবাহ কখনো থেমে থাকে না। সদা সচল সময়ের স্রোতধারা। বর্তমান বিলীন হয়ে যায় অতীতের বুকে। ভবিষ্যত ঠাঁই নেয় বর্তমানের প্রাঙ্গণে। আগমন ঘটে নতুনের, প্রস্থান ঘটে পুরানের। এটাই চরম বাস্তবতা। জাগতিক এই নিয়মে কালের রঙ্গীন পাখায় ভর করে প্রতি বছর আমাদের দ্বারপ্রান্তে হাজির হয় ঐতিহাসিক ও অসংখ্য ঘটনার স্মৃতি বিজড়িত মাস ‘মহররমুল হারাম’। আরবি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস এটি, এবং এবারের হিজরী সাল ১৪৪৭। মহররমের ইতিহাস এছাড়া আরো কিছু ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ রয়েছে, যেমন—মহররমের দশ তারিখে হযরত আদম (আ.)-এর তাওবা কবুল হওয়া, হযরত নুহ (আ.)-এর কিশতী জুদী পাহাড়ে নোঙর করা, হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর নমরূদ কর্তৃক অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তি পাওয়া, হযরত ইসরাফীল (আ.)-এর শিঙ্গার ফুৎকারে কেয়ামত সংঘটিত হওয়া, ইত্যাদি। তবে, এসব ঘটনার মধ্যে কিছু সহীহ ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রমাণিত নয় (ইসলাহী খুতুবাত, মুফতী তাকী উসমানী)। এছাড়া, হযরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম ও আসমানে উঠা, হযরত ইউনুস (আ.)-এর মাছের পেট থেকে মুক্তি লাভ, হযরত আইয়ুব (আ.)-এর দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ—এইসব ঘটনাও মহররম মাসের তাৎপর্যপূর্ণ ইতিহাসের অংশ। এ মাসের ইতিহাসে সবচেয়ে শোকাবহ এবং বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে ৬১ হিজরীতে, যখন ইরাকের কারবালা উপকণ্ঠে সংঘটিত হয়েছিল এক বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড। এটি ইতিহাসে "কারবালা ট্রাজেডি" হিসেবে পরিচিত। কুফাবাসীদের প্রতারণার সত্ত্বেও, হযরত হুসাইন (রা.) তার কয়েকজন অনুগামী সহ জিহাদের তীব্র মনোবল নিয়ে ইবনে যিয়াদের বাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি বিভ্রান্তির নিরসন মহররমের দশ তারিখে নানা ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল, যা আগে থেকেই এই দিনের পবিত্রতা ও ফযিলতকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। অতএব, আশুরার দিনে রোযা রাখার হুকুম ‘কারবালা ট্রাজেডি’-এর কারণে নয়, বরং এর আগে থেকেই মহররমের দিনের মর্যাদা ছিল। তবে হ্যাঁ, হযরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাত ওই দিনটিকে আরও স্মরণীয় করে তুলেছে, এবং এটি আমাদের হৃদয়ে আরও বেশি প্রভাব ফেলেছে। তাদের কথাও সঠিক নয় যারা মনে করেন যে, ‘কারবালা ট্রাজেডি’-এর কারণে আশুরার দিন রোযা রাখার হুকুম দেয়া হয়েছে। কাজলা, ঢাকা এমএইচ/ |