পিআর পদ্ধতি কী? বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
প্রকাশ:
২৮ জুন, ২০২৫, ০৭:৩২ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে অনেকেই ‘পিআর’ বা Proportional Representation পদ্ধতির কথা বলছেন। এ পদ্ধতিতে প্রত্যেক দল তাদের প্রাপ্ত মোট ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন পায়। একক প্রার্থী নয়, এখানে মূলত দলভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। ফলে কোনো দলের ভোট হারিয়ে যায় না, বরং তার প্রতিফলন সরাসরি সংসদে দেখা যায়। পিআর পদ্ধতি কী? পিআর পদ্ধতিতে (Proportional Representation) ভোটগ্রহণ হয় দলভিত্তিক। যে দল মোট ভোটের যত শতাংশ পাবে, সে দল তত শতাংশ আসন পাবে। এতে একটি এলাকার পরিবর্তে পুরো দেশকেই একটি একক ভোট এলাকা হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে ছোট দল, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। পিআর পদ্ধতির সুবিধাসমূহ ১. সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়: পিআর পদ্ধতির চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি: ১. সরকার গঠনে জটিলতা: বিশ্বের কোথায় কোথায় পিআর পদ্ধতি চালু আছে? ইউরোপ মহাদেশ: নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, জার্মানি (আংশিক) পিআর পদ্ধতিতে ইসরায়েল: ইসরায়েল একটি ক্লাসিক উদাহরণ, যেখানে পুরো দেশই একক ভোট এলাকা। যে দল মাত্র ৩.২৫% ভোট পায়, তারাও আসন পায়। এতে ছোট দলগুলো সবসময় সংসদে প্রবেশ করে। কিন্তু এ পদ্ধতির ফলে দেখা দেয় কিছু সমস্যাও— বাংলাদেশের জন্য কতটা উপযোগী? বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক ও আস্থার সংকট রয়েছে। অনেক দল ভোটে অংশ নেয় না, কেউ কেউ অংশ নিলেও ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এমতাবস্থায় পিআর পদ্ধতি কিছু সমাধান দিতে পারে যেমন: অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা, সংখ্যালঘু ও ছোট দলের কণ্ঠস্বর শোনা, রাজনৈতিক মেরুকরণ কিছুটা কমানো। তবে বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এখনো একক আধিপত্য ও ব্যক্তি-নির্ভরতায় গড়ে উঠেছে। পিআর পদ্ধতি চালুর আগে প্রয়োজন- রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহনশীলতা, জোট গঠনের বাস্তব প্রস্তুতি, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা। পিআর পদ্ধতি নিঃসন্দেহে একটি অংশগ্রহণমূলক ও ন্যায্য নির্বাচন পদ্ধতি। তবে এটি কোনো যাদুর কাঠি নয়। সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সাংবিধানিক সংস্কার ও জনসচেতনতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপক্বতা বিবেচনায় ধাপে ধাপে আংশিকভাবে পিআর পদ্ধতির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হতে পারে, যাতে করে ভবিষ্যতের জন্য একটি টেকসই ও ন্যায্য নির্বাচনী কাঠামো গড়ে তোলা যায়। এমএইচ/ |