হিজরতের চেতনা হতে পারে সবর ও দৃঢ়তার মজবুত হাতিয়ার
প্রকাশ:
২৮ জুন, ২০২৫, ০৭:২৩ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
শায়খ আহমাদুল্লাহ অনেকটা নিঃশব্দে নতুন আরেকটি হিজরি বছরে প্রবেশ করেছি আমরা। হিজরি বছর শুধুই একটি সন নয়, এর সঙ্গে মিশে আছে হিজরত, আত্মত্যাগ ও ঈমান রক্ষার এক ঐশী চেতনা। হিজরি পঞ্জিকার সাথে জড়িয়ে আছে হিজরতের স্মৃতি। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও সাহাবিরা ঈমানকে সুরক্ষিত করতে জন্মভূমির মায়া ত্যাগ করে মদিনায় হিজরত করেছিলেন। একই উদ্দেশ্যে ইবরাহিম (আ.) ইরাক থেকে ফিলিস্তিন ও মিশরে, ইউসুফ (আ.) কারাগারে, আসহাবে কাহাফের যুবকেরা গুহায় আত্মগোপন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ নবী-রাসুলের জীবনের বিরাট জায়গাজুড়ে আছে হিজরতের বেদনাবিধূর ও প্রেরণাদীপ্ত অধ্যায়। দুঃখের ইতিহাস সবাই ভুলে থাকতে চায়, সুখের স্মৃতি বারবার স্মরণ করে আনন্দ পায়। খ্রিস্টানরা তাই ঈসা (আ.)-এর জন্মসাল থেকে খ্রিস্টীয় সন গণনা শুরু করেছে। সাহাবিগণ করেছেন তার উল্টো। তারা হিজরতের মতো বেদনাদায়ক ঘটনা থেকে হিজরি সন গণনা আরম্ভ করেছেন। কারণ, সেই ত্যাগই মুসলিমদের পরবর্তী উত্থানের পটভূমি তৈরি করেছে। যুগে যুগে মুসলিমরা যেন হিজরতের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দীন ও ঈমান রক্ষার সংগ্রামে সর্বাত্মক ত্যাগ ও সেক্রিফাইস করে, তবেই সাফল্য তাদের পদচুম্বন করবে। প্রতি বছর হিজরি সন সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও ত্যাগের এই শিক্ষা থেকে আমরা যোজন যোজন দূরে সরে এসেছি। ঈমান রক্ষার জন্য নবী-রাসুলগণ প্রতিকূল পরিবেশ ত্যাগ করে অনুকূল পরিবেশে হিজরত করেছেন। আর আমরা একটুখানি বৈষয়িক সাফল্যের আশায় ঈমানের জন্য প্রতিকূল জীবন বেছে নিচ্ছি। হিজরতের চেতনা ধারণ শুধু পরকালীন সাফল্যেরই পূর্বশর্ত নয়, ইহকালীন সফলতারও মূল সূত্র। আগামীর পৃথিবী সংগ্রাম ও সংঘাতের পৃথিবী। আগামীর পৃথিবী যুদ্ধের পৃথিবী। চলমান এই নাজুক পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিজরতের চেতনা হতে পারে সবর ও দৃঢ়তার এক মজবুত হাতিয়ার। লেখক: বিশিষ্ট দাঈ, চেয়ারম্যান, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এমএইচ/ |