ফ্যাশনের নামে ফাঁদ! ই-সিগারেটে ধ্বংস হচ্ছে তরুণদের ফুসফুস
প্রকাশ:
১৩ জুন, ২০২৫, ১০:০৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
নাজমুল হাসান। তরুণ সমাজে ‘ফ্যাশন’ ও ‘কুল’ থাকার প্রতীক হিসেবে যেভাবে ই-সিগারেটের ব্যবহার বেড়ে চলেছে, তা এখন উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আধুনিক ধোঁয়ার ফাঁদে পা দিয়ে ধ্বংস হচ্ছে তরুণদের ফুসফুস, বিকল হচ্ছে শ্বাসতন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম। ই-সিগারেট বা ভ্যাপার একটি ব্যাটারিচালিত যন্ত্র, যা তামাক পুড়িয়ে নয় বরং তরল নিকোটিন গরম করে বাষ্প উৎপন্ন করে। অনেকে একে সাধারণ ধূমপানের তুলনায় ‘নিরাপদ’ ভেবে ব্যবহার শুরু করে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে ভিন্ন কথা। স্বাস্থ্যঝুঁকি: বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. আরিফ হোসেন বলেন, “ই-সিগারেটের বাষ্পে থাকা রাসায়নিক উপাদানগুলো ফুসফুসের কোষকে ধ্বংস করে দেয়। এতে দীর্ঘমেয়াদে শ্বাসকষ্ট, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।” বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ই-সিগারেট ব্যবহারকারীদের হৃদরোগ ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সাধারণ ধূমপায়ীদের চেয়েও বেশি। তরুণদের টার্গেট: বর্তমানে বাহারি ডিজাইন, বিভিন্ন স্বাদের ই-সিগারেট ও আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশেষ করে স্কুল-কলেজপড়ুয়া কিশোর-কিশোরীদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, এটি একটি কৌশলী ফাঁদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমার অনেক বন্ধু শুরুতে কৌতূহল থেকে ই-সিগারেট ব্যবহার শুরু করেছিল। এখন তাদের অনেকেই নিয়মিতভাবে ভ্যাপ করে। কেউ কেউ চেষ্টা করেও ছাড়তে পারছে না।” আইনি অবস্থান: বাংলাদেশে ২০২৩ সালের একটি প্রস্তাবিত আইনে ই-সিগারেট নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেটি কার্যকর হয়নি। ফলে বাজারে এখনও অবাধে বিক্রি হচ্ছে নানা ব্র্যান্ডের ই-সিগারেট। সমাধানের পথ: স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বিষয়ে তরুণদের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সচেতনতামূলক সেমিনার, সামাজিক মাধ্যমে প্রচার ও সরকারি হস্তক্ষেপ জরুরি। ফ্যাশনের নামে ছদ্মবেশী এই ধ্বংসাত্মক আসক্তি থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে এখনই প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ। না হলে ফুসফুস নয়, ধ্বংস হবে একটি সম্ভাবনাময় প্রজন্ম। এনএইচ/ |