
|
ইসলামপন্থীদের জোট টেকে না
প্রকাশ:
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
আবদুস সাত্তার আইনী ২০০১ সালের চারদলীয় জোট ছিল মূলত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর নেতৃত্বে গঠিত একটি রাজনৈতিক জোট, যেখানে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি (নাজিউর) এবং ইসলামী ঐক্যজোট অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই জোট ১৯৯৯ সালে গঠিত হয়েছিল এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়ে সরকার গঠন করে। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর ৭টি ইসলামি দলের সমন্বয়ে ইসলামী ঐক্যজোট গঠিত হয়। দলগুলো হলো খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ও ফারয়েজী জামায়াত। ইসলামী ঐক্যজোট ছিল মূলত ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠেয় পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামপন্থী দলগুলোর একটি নির্বাচনী জোট। অবশ্য এটি ছিল জামায়াতে ইসলামীরর বিপরীতে অন্য ইসলামী দলগুলোর জোট।) ২০০১ সালের নির্বাচনে ইসলামী ঐক্যজোটের মনোনীত ও চারদলীয় প্রার্থী হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল) আসন থেকে মুফতি ফজলুল হক আমিনী, যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে থেকে মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাছ সংসদ সদস্য মনোনীত হন। উপ-নির্বাচনে নির্বাচিত হন ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী নড়াইল-২ আসন থেকে মুফতি শহিদুল ইসলাম ও সুনামগঞ্জ থেকে মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। তাঁদের চারজনেরই প্রতীক ছিল ধানের শীষ। অন্যদিকে ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয় পেলেও একটি আসনেও জয় পায়নি ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বা অন্য দল। নির্বাচনের পরপরই এই জোট ভেঙে যায়। (পাঁচটি দলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দল পাঁচটি হল জাতীয় পার্টি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল (পিএনপি) ও মুসলিম লীগ। ) ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট। তখন মন্ত্রিসভায় থাকা না-থাকা নিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটে আধিপত্যের লড়াই বাঁধে। একদিকে অবস্থান নেন জোটের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদীস আজিজুল হক, অন্যদিকে মহাসচিব মুফতি আমিনী। শায়খুল হাদীসকে বাদ দিয়ে মুফতি আমিনী নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করে নতুন ঐক্যজোট গঠন করে এবং মহাসচিব হিসেবে নেন নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ইজহারকে। অপরদিকে শায়খুল হাদীস মুফতি আমিনীকে বহিষ্কার করে নিজে চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকেন এবং এ আর এম আবদুল মতিনকে মহাসচিব বানান। এই বিভাজনে ইসলামী ঐক্যজোটে চারটি দল মুফতি আমিনীর সঙ্গে থাকে এবং শাইখুল হাদীসের নেতৃত্বাধীন থাকে শুধু খেলাফত মজলিস। ২০০১ সালে এককভাবে নির্বাচন করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম খেজুরগাছ প্রতীকে পেয়েছিল মাত্র ১৯,২৫৬ ভোট এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন বটগাছ প্রতীকে পেয়েছিল মাত্র ১৩,৪৭২ ভোট। তিউনিশয়ায় বেন আলীর বিরুদ্ধে ইসলামপন্থীদের জোট হয়েছিল। তাদের সঙ্গে বামপন্থীরাও ছিল। বেন আলীর সরকার এই জোটের নাম দিয়েছিল ‘তিনমাথাওয়ালা শয়তান।’ বেন আলীর পতনের পরপরই এই জোট ভেঙে যায় এবং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে-সরকার গঠিত হয় তাতে তাদের অংশগ্রহণ থাকে ন্যূনতম। এমন একজন প্রধামন্ত্রী মনোনীত হন যাকে লোকেরা কমই চিনত। লেখক: কলামিস্ট, চিন্তক ও বিশ্লেষক এনএইচ/ |