
|
‘উসমান হাদির হত্যা মামলায় সরকারের ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়’
প্রকাশ:
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৮:৩২ সকাল
নিউজ ডেস্ক |
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, কায়েমি স্বার্থবাদী ও বুর্জোয়া শক্তিকে প্রত্যাখ্যান করে দেশ ও জাতির জন্য নিজেকে কুরবানি করার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন শহীদ শরীফ উসমান হাদি। তার আপসহীন চরিত্র ও আদর্শিক দৃঢ়তার কারণেই তিনি চিরদিন জনগণের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন। জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি প্রমাণ করেছে—শহীদ উসমান হাদী এখনো জনতার চেতনায় চিরভাস্বর হয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো—বর্বরোচিত ও প্রাণঘাতী হামলার মাধ্যমে শহীদ উসমান হাদীর শাহাদাতের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত মূল হত্যাকারী, ষড়যন্ত্রকারী ও নেপথ্যের কুশীলবদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনতে সরকার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। এই চরম ব্যর্থতা জনমনে গভীর ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দিয়েছে। পুঞ্জীভূত এই ক্ষোভ যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে—এ বিষয়ে তিনি সরকারকে সুস্পষ্টভাবে সতর্ক করেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল নয়টা থেকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ২০২৫-২০২৬ কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অধিবেশন পরিচালনা করেন সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। বৈঠকে আমিরে মজলিস বলেন, বিগত স্বৈরাচারী হাসিনার শাসনামলে কিছুসংখ্যক মিডিয়া ফ্যাসিবাদ তোষণে আত্মনিয়োগ করেছিল। তারা ‘জঙ্গিবাদ’, ‘বিএনপি-জামায়াত’, ‘রাজাকার’সহ বিভ্রান্তিকর ও নেতিবাচক বয়ান তৈরি করে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নকে উসকে দিয়েছে এবং সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছে। ফলে ২৪-এর পরবর্তী সময়ে এসব মিডিয়ার প্রতি জনগণের ক্ষোভ থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট—আমরা নিজের জীবনের শত্রুর প্রতিও ইনসাফ চাই। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কিংবা কোনো ধরনের জ্বালাও-পোড়াও নীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই এবং কখনোই তার সমর্থক নই। তিনি আরও বলেন, অতীতে দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক নয়া দিগন্ত, দৈনিক সংগ্রাম, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, শীর্ষনিউজ ডটকমসহ বরেণ্য সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও প্রবীণ সাংবাদিক আবুল আসাদের ওপর যে সীমাহীন অত্যাচার, অবিচার ও নিপীড়ন চালানো হয়েছিল—সেই সময় যদি মিডিয়া জগৎ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হতো, তাহলে আজ দুটি মিডিয়া হাউজ ও একজন সম্মানিত সম্পাদক আক্রান্ত হওয়ার দুঃখজনক ঘটনাও হয়তো ঘটত না। আমিরে মজলিস বলেন, আমরা সবসময়ই এ ধরনের নেক্কারজনক সহিংস ঘটনার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়েছি। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে প্রকৃত সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ না করেই কিংবা সংশ্লিষ্টতার মাত্রা বিবেচনা না করে নির্বিচারে গ্রেপ্তারের নীতিকেও আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। একজন নির্দোষ ব্যক্তিকেও অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছেন এবং ভবিষ্যতে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবেন—উভয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শত্রু ও মিত্র চেনার ক্ষেত্রে কোনো বিভ্রান্তি বা ভুল করা চলবে না। ফ্যাসিবাদী শক্তিকে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হলে অচিরেই তার ভয়াবহ মূল্য দিতে হবে। এনএইচ/ |