
|
বিহারে মুসলিম হকার হত্যা: ভিকটিমকেই ‘চোর’ বানানোর চেষ্টা
প্রকাশ:
২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:৪৩ সকাল
নিউজ ডেস্ক |
বিহারের নবাদা জেলার রোহ ব্লকের ভাট্টা গ্রামে ৫০ বছর বয়সী মুসলিম হকার মোহাম্মদ আতহারকে হিন্দু উগ্র জনতার পিটুনিতে হত্যার কয়েকদিন পর এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। ওই ভিডিওতে নিহত আতহারকে চোর হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের এই পদক্ষেপে নিহতের পরিবার, স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় ও মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাদের অভিযোগ, এটি এক ধরনের “মৃত্যুর পরও ভিকটিমকে দোষারোপ” করার চেষ্টা। পরিবার ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত হামলায় গত ৫ ডিসেম্বর রাতে আতহারকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি পরে মারা যান। এই হত্যাকা-ের পর স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং দোষীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনের নাম এফআইআরে উল্লেখ রয়েছে এবং ছয়জন অজ্ঞাতনামা। তবে এখন তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া প্রায় ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও। এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ভিডিওটি “চুরির অভিযোগের দিক” থেকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। “একটি ছোট ভিডিও সামনে এসেছে। আমরা সব দিক যাচাই করছি,”- বলেন ওই কর্মকর্তা। নিহতের স্ত্রী শাবনাম, যিনি ৬ ডিসেম্বর এফআইআর দায়ের করেন, এই তদন্তপদ্ধতির তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তার অভিযোগ, প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের বদলে পুলিশ নিহতকেই দোষী প্রমাণের চেষ্টা করছে। পরিবারের দাবি, আতহার ছিলেন একজন দরিদ্র কিন্তু সৎ হকার। তিনি আশপাশের গ্রামে ঘুরে ঘুরে সংসারের সামগ্রী বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এক প্রতিবেশী বলেন, “তিনি গরিব ছিলেন, কিন্তু চোর নন। আইন নয়, জনতাই তার ভাগ্য নির্ধারণ করেছে।” পরিবার আরো জানায়, মৃত্যুর আগে আতহার হামলার ভয়াবহ বর্ণনা দিয়ে গেছেন। তার অভিযোগ অনুযায়ী, হামলাকারীরা তাকে বিবস্ত্র করে ধর্ম সম্পর্কে প্রশ্ন করে, গরম লোহার রড দিয়ে শরীরে দগ্ধ করে এবং প্লাস দিয়ে কানের একটি অংশ কেটে দেয়। পুলিশ বলছে, তদন্ত এখনও চলমান। এদিকে আতহারের পরিবার ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা দাবি জানিয়েছেন, তদন্ত যেন নিরপেক্ষ ও ন্যায়সঙ্গত হয় এবং নিহতের ওপর দায় চাপানোর পরিবর্তে লিঞ্চিংয়ের জন্য দায়ীদের কঠোরভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা হয়। সূত্র : মাকতূব মিডিয়া। এনএইচ/ |