আরবি: মুসলমানের আত্মপরিচয়ের ভাষা
প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৩:২১ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

মিজান মুহসিন

প্রতিটি মানুষের কাছে তার মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ ভাষার মাধ্যমেই মানুষ তার নিজের পরিচয় প্রকাশ করে। ঠিক তেমনিভাবে, একজন মুমিনের আত্মপরিচয়ের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো আরবি ভাষা। এটি কেবল নির্দিষ্ট কোনো জাতি বা গোষ্ঠীর ভাষা নয়, বরং এটি ইসলাম ও দ্বীনের ভাষা।

আরবি ভাষা মহান আল্লাহর কালাম পবিত্র কুরআনের ভাষা, আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভাষা এবং প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ের ভাষা। এটি পৃথিবীর একমাত্র ধর্মীয় ভাষা, যে ভাষায় ইবাদত করা সওয়াবের কাজ। মুমিন বান্দা এই ভাষার মাধ্যমেই তার রবের সঙ্গে কথা বলে, নিজের জীবনের সকল সমস্যার কথা রবের দরবারে তুলে ধরে এবং রবের নৈকট্য প্রার্থনা করে।

একজন মুসলিমের জীবনে আরবির প্রভাব অনস্বীকার্য। কেননা আরবি ভাষা ছাড়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ শুদ্ধ হয় না। মুসলিমদের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন তিলাওয়াত ও উপলব্ধির জন্য এই ভাষা অপরিহার্য। সকাল-সন্ধ্যার দোয়া ও জিকিরগুলোও আমরা এই ভাষাতেই পাঠ করি।

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) বলেছেন, ‘তোমরা আরবি ভাষা শিক্ষা করো, কেননা তা তোমাদের দ্বীনেরই একটি অংশ।’

প্রখ্যাত মুফাসসির ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘কুরআন ও হাদিস বোঝা নির্ভর করে আরবি ভাষা বোঝার ওপর। আর যা ছাড়া দ্বীন বোঝা সম্ভব নয়, তা শেখা আমাদের ওপর আবশ্যক।’

আমাদের মনে রাখা উচিত, আরবি কেবল আরব দেশের ভাষা নয়; এটি আমাদের ধর্মীয় সত্তার অংশ। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের জীবনের প্রতিটি বাঁকে আরবির প্রয়োজন রয়েছে। তাই এই ভাষাকে আমাদের আত্মপরিচয়ের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা এবং এতে গর্ববোধ করা বাঞ্ছনীয়।

পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষা আরবির মতো এত সমৃদ্ধ ও অলংকারপূর্ণ নয়। যুগের পর যুগ ধরে এই ভাষা তার স্বকীয়তা বজায় রেখেছে। কিয়ামত পর্যন্ত পবিত্র কুরআন যেমন সুরক্ষিত থাকবে, এই ভাষাও তেমনি টিকে থাকবে ইনশাআল্লাহ। তাই এই সম্মানিত ভাষাই হোক আমাদের পরিচয়ের সেতুবন্ধন।

লেখক: আরবি ভাষা প্রশিক্ষক, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন

আরএইচ/