
|
ওয়াজ মাহফিল: অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক
প্রকাশ:
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৭:৫৫ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
মুফতি জুবায়ের বিন আব্দুল কুদ্দুস অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে আমরা লক্ষ্য করছি যে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওয়াজ মাহফিলের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। "নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া সব ধরনের (ধর্মীয় প্রচার) ওয়াজ মাহফিল আয়োজন নিষিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন ইসি। যা খুবই দুঃখজনক। আসলে ওয়াজ মাহফিলের উদ্দেশ্যটা আগে জানতে হবে। ওয়াজ মাহফিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে- মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা। অশ্লীল,মন্দ, নিকৃষ্ট, গর্হিত- কাজকর্ম, জুলুম, নির্যাতন, অন্যায়-অনাচার, যিনা-ব্যভিচার, পরকীয়া, অবৈধ সম্পর্ক, হত্যা, লুণ্ঠন, দুর্নীতি, খুনখারাবি, চাঁদাবাজি, মাদকাসক্তি সহ সকল গর্হিত কর্মকান্ড থেকে মুক্ত করে মানুষকে সৎ, আদর্শবান, চরিত্রবান মানুষ বানাতে চেষ্টা করে। নির্বাচন কে কেন্দ্র করে দেশে কালো টাকার ছড়াছড়ি হয়। মানুষ খুন হয়। এক প্রার্থীর সমর্থকরা অপরপ্রার্থীর সমর্থকদেরকে মারধর করে। প্রচার কাজে বাধা বিঘ্নতা ঘটায়। কোন দুর্বল প্রার্থীকে টাকা কিংবা গায়ের জোরে বসিয়ে দিতে বাধ্য করে। এজাতীয় আরো বহু কর্মকাণ্ড অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে ব্যাহত করে। এভাবে যে জাতি নীতি নৈতিকতা ও আদর্শ বিবর্জিত হয়ে মানুষ রূপের অমানুষ হয়ে যাচ্ছে, এ থেকে জাতিকে বাঁচানোর কি প্রচেষ্টা করছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) ? এই সকল ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে মানুষকে সত্যিকারের মানুষ বানানোর চেষ্টা করা হয়ে থাকে। হক্কানী ওলামায়ে কেরাম যারা সত্যিকার অর্থে নবীর ওয়ারিশ, তারা অবশ্যই ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে এ প্রচেষ্টাই চালিয়ে যান। তাই আমি মনে করি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ওলামাদের কাছে এই প্রস্তাব আসা উচিত ছিল যে, আপনারা নির্বাচনকে সামনে রেখে সুন্দর, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবেন। কালো টাকার ছড়াছড়ির ব্যাপারে সতর্ক করবেন। যেন কারো উপর জুলুম না হয়। অর্থ ও ক্ষমতার জোরে অন্য প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা যেনো কেউ না করে। মারামারি, কাটাকাটি, খুন খারাবী ও থ্রেটবাজি মুক্ত যেন হয় আমাদের এই নির্বাচন। ভোট চুরি, কেন্দ্র দখল, ভোট ক্রয়, কেন্দ্রে হামলা ইত্যাদি সহ সকল অবৈধ কাজকর্ম থেকে মানুষকে বিরত রাখার জন্য ওয়াজ মাহফিল ও জুমার বয়ানগুলোতে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। আমি সম্মানের সাথে নির্বাচন কমিশন এবং উপদেষ্টা বৃন্দের কাছে জিজ্ঞেস করতে চাই এই ওয়াজ মাহফিল এবং জুমার বয়ান গুলো ছাড়া আর কোথাও কি এই বিষয়ে জনসাধারণকে সতর্ক করার কাজ চলছে? আপনারা কি কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন? ইসির সম্মানিত নেতৃবৃন্দ! ইসলামের সূচনা লগ্ন থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত ওলামায়ে কেরাম এভাবেই মানুষদেরকে ওয়াজ নসিহতের মাধ্যমে মন্দকর্ম থেকে ফিরিয়ে রাখার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে আসছেন। তাহলে যদি ওয়াজ মাহফিলকে আপনারা বন্ধ করে দেন তাহলে কোথা থেকে এই শিক্ষা জাতি লাভ করবে? বরং অন্যায় অনাচার পাপাচার আগের তুলনায় আরো বহু গুণ বৃদ্ধি পাবে। এই বিষয়ের প্রতি বিবেচনা করে আপনাদের উচিত বিজ্ঞ ওলামাদের সাথে পরামর্শ করে কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক বিষয় বুঝে শান্তি-সুখের সমাজ গড়ার তৌফিক দান করেন, আমীন। শিক্ষক: জামেয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ ঢাকা আরএইচ/ |