ইমরান খানের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে : জাতিসংঘ
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:৫৯ সকাল
নিউজ ডেস্ক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই নেতা ইমরান খানকে কারাবন্দি করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এবার জাতিসংঘের (ইউএন) একজন বিশেষ দূত সতর্ক করে বলেছেন যে, ইমরান খানকে এমন পরিস্থিতিতে আটকে রাখা হচ্ছে যা অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণের সমান হতে পারে।

তিনি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক মান এবং নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদনকারী অ্যালিস জিল এডওয়ার্ডস শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জানান, ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে অমানবিক শর্তে রাখা হচ্ছে। তার আইনজীবী দল গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেছিল, ইমরান এবং তার স্ত্রীকে কারাগারে নির্যাতন করা হচ্ছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিবেদক সতর্ক করেছেন যে, এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মান অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়। উল্লেখ্য, ইমরান খান ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর একটি দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আদিয়ালা জেলে স্থানান্তরিত হন। সেখানে তাকে প্রায় ২৩ ঘণ্টা একাকী কক্ষে রাখা হয়। তার কক্ষে সারাক্ষণ ক্যামেরা নজরদারি চলছে এবং বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ অত্যন্ত সীমিত। এডওয়ার্ডস বলেন, ‘ইমরান খানের একাকী কারাদ- অবিলম্বে তুলে নেওয়া উচিত। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী তার কারাবন্দির শর্ত উন্নত করতে হবে।’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সহকারী রানা ইহসান আফজাল এই অভিযোগ অগ্রাহ্য করে বলেন, ইমরানকে কারাগারের নিয়ম ও জেলের নিয়ম অনুসারে রাখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ইমরানের সন্তানরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারছে এবং ফোনে যোগাযোগ করতে কোনো বাধা নেই। আফজাল বলেন, বি-শ্রেণির বন্দি হিসেবে তার অধিকারের চেয়ে বেশি সুবিধা রয়েছে, যেমন ব্যায়ামের সুযোগ, ভালো খাবার এবং পর্যাপ্ত স্থান। ইমরানের সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন, তাকে আইনজীবী এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে জেলের বাইরে বা কাছাকাছি বহু প্রতিবাদ, মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইমরান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন এবং ১৯০ (পাউন্ড) মিলিয়ন মূল্যের দুর্নীতি মামলায় সাজায় আছেন। এছাড়া ২০২৩ সালের ৯ মে-এর বিক্ষোভের কারণে সন্ত্রাসবাদ (অ্যান্টি-টাররিজম) আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলা রয়েছে।

এদিকে ইমরান খানের সাবেক স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথ এক্স প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ করেছেন, ইমরানের জেল জীবন, একাকী কারাদ- এবং সন্তানদের যোগাযোগের বিষয় সম্পর্কিত পোস্টগুলো অ্যালগরিদমের মাধ্যমে সীমিত করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ ইমরানের সমালোচনাকে অনলাইনে চাপা দেওয়ার অগ্রাধিকার দিয়েছে, আর এক্স তা অনুসরণ করছে। ইমরানের ছেলে কাসিম খান ১ ডিসেম্বর এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি ভয় পাচ্ছেন যে, কর্তৃপক্ষ তার বাবার স্বাস্থ্য সম্পর্কে কিছু তথ্য লুকাচ্ছে। তবে ২ ডিসেম্বর ইমরানের বোন উজমা খানুম জানান, ইমরান পুরোপুরি সুস্থ। তিনি বলেন, “ইমরান রাগী ছিলেন এবং জানালেন যে, তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। সারাদিন তার কক্ষে বন্দী রাখা হচ্ছে এবং অল্প সময়ের জন্যই বাইরে যেতে পারছেন।” তাদের সাক্ষাৎ মাত্র ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল। সূত্র : দ্য ডন।