
|
নবীযুগে দ্বীনি কাজে নারীদের অংশগ্রহণ
প্রকাশ:
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:০০ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
ইসলাম একটি মিশনারি বা প্রচারমুখী ধর্ম। ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের সদস্য হওয়া আবশ্যক নয়, বরং মুসলিম মাত্রই দ্বিনের প্রচারক। প্রত্যেক মুসলমান নিজের জ্ঞান ও সামর্থ অনুপাতে দ্বিনের প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার পক্ষ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছে দাও।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৬১) দ্বিন প্রচারের দায়িত্ব নারী ও পুরুষ উভয়ের অন্য আয়াতে আল্লাহ দ্বিন প্রচার ও প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে পুরুষ ও নারীকে পৃথক না করেই বলেছেন, ‘তোমরাই শ্রেসম উম্মত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা সত্কাজের নির্দেশ দান করো এবং অসত্কাজ থেকে নিষেধ করো। আর আল্লাহতে বিশ্বাস করো।' (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১১০) নবীযুগে দ্বিনি কাজে নারীদের অংশগ্রহণ
৫. বাইআত গ্রহণ : সাহাবায়ে কেরাম (রা.) দ্বিনদারির ওপর অটুট থাকা এবং দ্বিনের জন্য আত্মত্যাগ স্বীকারের যে বাইআত গ্রহণ করেন, তাতে নারী সাহাবিরাও অংশগ্রহণ করেছিলেন। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী! মুমিন নারীরা যখন তোমার কাছে এসে বাইআত করে এই মর্মে যে, তারা আল্লাহর সঙ্গে কোনো শরিক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তান হত্যা করবে না, তারা সজ্ঞানে কোনো অপবাদ রচনা করে ছড়িয়ে দেবে না এবং ভালো কাজে আপনাকে অমান্য করবে না তখন তাদের বাইআত গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত : ১২) নবুয়াতের দ্বাদশ বর্ষে ৭৫ জন সাহাবি নবীজি (সা.)-কে মদিনায় হিজরতের আমন্ত্রণ করেন এবং তাঁকে রক্ষায় জীবন ও সম্পদ উত্সর্গ করার অঙ্গীকার করেন। তাদের ভেতর দুজন নারীও ছিলেন। সেৌভাগ্যবান দুই নারী হলেন উম্মে আম্মারা নাসিবা বিনতে কাব (রা.) এবং উম্মে মানি' আসমা বিনতে আমর (রা.)। এই সাক্ষাতে তারা (মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস : ১/৩৮০) ৬. হিজরত বা মাতৃভূমি ত্যাগ : ইসলাম গ্রহণের কারণে মক্কার মুশরিকরা যখন সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালাচ্ছিল তখন নবীজি (সা.) তাদেরকে দেশ ত্যাগের অনুমতি দেন। নবুয়াতের পঞ্চম বছর ঈমান ও দ্বিন রক্ষার জন্য প্রথম কাফেলা হাবশার উদ্দেশ্যে মাতৃভূমি ত্যাগ করেন। তাদের ভেতর নবীজি (সা.)-এর কন্যা রোকাইয়া (রা.)-সহ চারজন নারী ছিলেন। নবুয়াতের সপ্তম বছর ৭০ জন পুরুষের সঙ্গে আরো ১৮ জন নারী সাহাবি হাবশায় হিজরত করেন। (মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস : ১/৩২২) ৭. যুদ্ধের ময়দানে অংশগ্রহণ : রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে নারীরা যুদ্ধের ময়দানেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের প্রধান কাজ যুদ্ধাহতদের সেবা শশ্রূষা করা হলেও কখনো কখনো অস্ত্রও হাতে তুলে নিয়েছেন। যেমন উম্মে আম্মারা (রা.)। তিনি উহুদ যুদ্ধে অসীম সাহসিকতা প্রদর্শন করেন। হাদিসে এসেছে, ইবনে কিমিয়্যা মহানবী (সা.)-কে আঘাত করতে উদ্ধত হলে তিনি নিজের কঁাধ দিয়ে তা প্রতিহত করেন। উম্মে আম্মারা (রা.) উহুদের যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর জন্য প্রাণপণ যুদ্ধ করেন। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) উহুদের যুদ্ধে উম্মে আম্মারা (রা.)-এর ভূমিকা সম্পর্কে বলেন, Èআমি যখন ডানে-বামে তাকিয়েছি কেবল তঁাকে যুদ্ধ করতে দেখেছি।' (কানজুল উম্মাল, হাদিস : ৩৭৫৮৯) এনএইচ/ |