
|
ইমরান খানের বেঁচে থাকার কোনও প্রমাণ নেই, দাবি ছোট ছেলের!
প্রকাশ:
২৮ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:৫৫ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মৃত্যুর খবরে তোলপাড় চলছে দেশটিতে। এর মাঝেই তার তিন বোন অভিযোগ তুলেছেন, ভাইয়ের সঙ্গে বারবার দেখা করতে চাইলেও অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না তাদের। এমনকি ইমরান খানের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাতের দাবি জানাতে গিয়ে পুলিশের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন তারা। আদিয়ালা কারাগারের বাইরে তাদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংস হামলার পর রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ইমরান খান ও তার দল পিটিআইয়ের সমর্থকদের মধ্যে। এতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো পাকিস্তান। আদিয়ালা কারাগার এলাকায় জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার পিটিআই নেতাকর্মী। এ অবস্থায় একটি বিবৃতি দিয়েছে আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষ, যেখানে তারা দাবি করেছে, ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারেই আছেন। আদিয়ালা থেকে তাকে অন্যত্র সরানোর খবর সত্য নয়। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন। তার অসুস্থতার খবর ভিত্তিহীন এবং তার সুস্থতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফও জানান, কারাগারে ইমরান খানকে সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, তিনি কারাগারে থেকে যে সুবিধা পেতেন ইমরান খান এর চেয়েও বেশি পাচ্ছেন। তবে, এরপরও ইমরান খানের অবস্থা ঘিরে রহস্য রয়েই গেছে। বিতর্ক নতুন করে উসকে দিয়েছেন তারই ছোট ছেলে কাসিম খান। তার দাবি অনুযায়ী, তার বাবার বেঁচে থাকার কোনও প্রমাণ এখনও নেই পরিবারের কাছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কাসিম বলেছেন, পরিবারকে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি তার জীবিত থাকার কোনও প্রমাণও নেই। পরিস্থিতিকে ‘ইচ্ছাকৃত অন্ধকারে রাখা’ হচ্ছে। কাসিম পাকিস্তানের বাইরে বসবাস করেন এবং সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন। এক্সে নিজের পোস্টে তিনি লিখেন, ইমরান খান ৮৪৫ দিন ধরে কারাবন্দি এবং গত ছয় সপ্তাহ ধরে তাকে ‘ডেথ সেল’-এ একক বন্দিত্বে রাখা হয়েছে। তার দাবি, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। তিনি লিখেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তান সরকার অঘোষিতভাবে ইমরান খানের সঙ্গে পরিবারের সাক্ষাৎ বন্ধ রেখেছে। কোনও ফোন কল হয়নি, কোনও দেখা হয়নি এবং জীবনের কোনও প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে না। কাসিম তার পোস্টে সতর্ক করে বলেন, ইমরান খানের নিরাপত্তা সম্পর্কে যে কোনও ঘটনার জন্য পাকিস্তান সরকার এবং তাদের ‘হ্যান্ডলারদের’ আইনগত, নৈতিক ও আন্তর্জাতিকভাবে পূর্ণ দায় বহন করতে হবে। এরপর তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্দেশে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে লিখেন, ইমরান খানের জীবিত থাকার প্রমাণ নিশ্চিত করুন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সাক্ষাৎ নিশ্চিত করুন, এই অমানবিক বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটান এবং রাজনৈতিক কারণে আটক পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতার মুক্তির দাবি তুলুন। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান। এরপর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন মামলা দেওয়া হয়। এছাড়া সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে হামলা, রাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগও আনা হয় তার বিরুদ্ধে। অনেক নাটকীয়তার মধ্যে ২০২৩ সালে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। একবার ছাড়া পেলেও পরবর্তীতে আবার গ্রেপ্তার করা হয় ইমরান খানকে। এরপর ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে জেলেই আছেন তিনি। এনএইচ/ |