হামাসের নিয়ন্ত্রণে গাজা, সন্তুষ্ট ফিলিস্তিনিরা, কী বলছে ইসরাইল
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:১০ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

দখলদার ইসরাইলের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো স্বীকার করেছে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস আবারও দৃঢ়ভাবে গাজায় ফিরে এসেছে এবং অঞ্চলে কার্যত পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে। হামাসের এই প্রত্যাবর্তনকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে বড় ধরনের বাধা হিসেবে দেখছে।

ইরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা মূল্যায়নে দেখা যাচ্ছে— হামাস প্রশাসনিক কাঠামো এবং পুলিশ বাহিনী পুনর্গঠন করে গাজায় প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।

ইসরাইলি টিভি চ্যানেল-১৩ জানিয়েছে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো মন্ত্রিসভার কাছে যে তথ্য উপস্থাপন করেছে, তাতে হামাসের প্রশাসনিক কর্মকাঠামো পুনরায় সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। গাজার ২৫টি পৌরসভার মধ্যে ১৩টি ইতোমধ্যে পুরোদমে কাজে ফেরার পাশাপাশি হামাস-আধিপত্যাধীন পুলিশ বাহিনীও বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে টহল দিচ্ছে।

‘আরব ৪৮’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন— হামাস গাজায় ‘প্রায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ নিয়ে পুনরায় আবির্ভূত হয়েছে এবং দ্রুত তাদের সক্ষমতা পুনর্গঠন করছে।

হামাসের জনপ্রিয়তা বাড়ছে

মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এর রিপোর্টেও একই চিত্র উঠে এসেছে। তারা জানায়, অস্ত্রবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় হামাসের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনার জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পত্রিকাটি বলছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতিই হামাসের প্রতি জনসমর্থন বৃদ্ধির মূল কারণ। অস্ত্রবিরতি স্থিতিশীল হওয়া এবং ইসরাইলি বাহিনীর পশ্চাদপসারণের পর হামাসের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় টহল দিচ্ছে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনছে।

গাজা শহরের ব্যবসায়ী হাজিম সারুর বলেন,
“আমরা নিরাপত্তাহীনতা, চুরি, দাঙ্গা ও আইনহীনতা দেখেছি। হামাস ছাড়া এগুলো থামাতে আর কেউ সক্ষম নয়। তাই মানুষ তাদের সমর্থন করছে।”

কূটনৈতিক ক্ষেত্রে হামাসের সক্রিয় উপস্থিতি

গাজা ইস্যুর কূটনৈতিক পরিসরেও হামাসের সম্পৃক্ততা বাড়ছে। মিসর, কাতার ও তুরস্ক— এই তিন মধ্যস্থতাকারী দেশের প্রতিনিধিদল ২৫ নভেম্বর কায়রোতে সমবেত হয় অস্ত্রবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রও এই আলোচনার প্রধান অংশীদার।

মিসরের গোয়েন্দা বিভাগের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, বৈঠকে মিসর ও তুরস্কের গোয়েন্দা প্রধান এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় ইসরাইল-হামাস অস্ত্রবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য যৌথ প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।

এনএইচ/