বন্দর চুক্তি নিয়ে গোপনীয়তা উদ্বেগজনক: বাংলাদেশ ন্যাপ
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:৩৫ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুই বন্দর পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানির সাথে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে গোপনীয়তা করছে প্রশ্ন করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, ‘নিজেদের ঘোষণা অনুযায়ী, অন্তর্র্বর্তী সরকার আগামী দুই-তিন মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকার কথা নয়। তাহলে এ রকম একটা সরকার কী কারণে ৪০-৫০ বছরের এমন একটা চুক্তি সম্পাদন করবে, যেটা পুরো অর্থনীতি ও দেশকে প্রভাবিত করতে পারে এবং যার মধ্যে অনেক ধরনের উদ্বেগের বিষয় থাকতে পারে। সেই চুক্তি স্বাক্ষর কেন গোপনীয়তা ও অস্বচ্ছতার সঙ্গে ছুটির দিনে তাড়াহুড়া করে করা হবে? তারা এ ধরনের একটা চুক্তি করার এখতিয়ার কী বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালিন সরকারের আছে ?’

আজ রবিবার (২৩ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।

তারা চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল নিয়ে চুক্তির বিস্তারিত দেশবাসীর সামনে প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেছেন, লালদিয়া ও পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালের চুক্তিপ্রক্রিয়া ও সিদ্ধান্ত গ্রহন ত্রুটিপূর্ণ ও অস্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় বন্দর ব্যবহারকারীদের যুক্ত করা হয়নি; তাঁরা চুক্তির শর্ত ও বিষয় সম্পর্কে জানেন না। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালের ক্ষেত্রেও একই ধরনের তাড়াহুড়া ও অস্বচ্ছতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রকল্পে সময় নিয়ে অংশীজনদের মতামত গ্রহণ না করলে প্রকল্পের ব্যয় ও কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একইভাবে লালদিয়া, পানগাঁও ও নিউমুরিং টার্মিনালের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি দেশের জাতীয় স্বার্থের জন্য হুমকির সম্ভাবনা রয়েছে। অতীত সরকারের সময় এ রকম উদ্যোগে কমিশনভোগীদের যে গোপন সংশ্লিষ্টতা থাকত, তা থেকে বাংলাদেশ মুক্তি চেয়েছিল বিগত গণ-অভ্যুত্থানে।’

তারা আরো বলেন, ‘দেশবাসী চায় না, অতীতের মতো এ রকম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ নিয়ে গোপনে কোনো চুক্তি হোক। চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনাল নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে হবে স্বচ্ছতার সঙ্গে। বন্দরের মতো কৌশলগত সম্পদ নিয়ে চুক্তি করার আগে চুক্তির শর্ত দেশবাসীর নিকট প্রকাশ করতে হবে। তাই ১৭ নভেম্বর সম্পাদিত চুক্তি অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘যেখানে সরকারের অস্থিরতা থাকা উচিত ছিল আইনশৃঙ্খলা, নারী নির্যাতন, মব সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের বিষয়ে, কিন্তু বন্দর ইজারা নিয়ে অস্বাভাবিক তৎপরতা জনস্বার্থবিরোধী বলেই দেশবাসী মনে করে। মনে রাখতে হবে, বিদেশি বিনিয়োগ মানেই উন্নয়ন, এই ধারণা বিভ্রান্তিকর। দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রফতানি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়, সেখানে বিদেশি কর্তৃত্ব কৌশলগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার অসমাপ্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দেশকে একটা ভয়াবহ বিপদের মধ্যে ঠেলে দেয়ার সকল দায় বর্তমান সরকারকেই বহন করতে হবে।”

এলএইস/