
|
মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী গ্রেপ্তার
প্রকাশ:
২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:০৭ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় আলোচিত-সমালোচিত মুফতি ও শরিয়াহভিত্তিক নিকাহ (বিবাহ) কনসালটেন্ট প্ল্যাটফর্ম ‘আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো’র প্রতিষ্ঠাতা মামুনুর রশিদ কাসেমী গ্রেপ্তার হয়েছেন। রোববার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকার আঁটিবাজারের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল হক। তিনি জানান, ‘গত পরশু কাসেমীর স্ত্রী কেরানীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় আজ (রোববার) মুফতি কাসেমীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে আমাদের হেফাজতে আছেন।’ বহুবিবাহ করার কারণে বেশ সমালোচিত মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমী। তৃতীয় স্ত্রী পরিচয়ে তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন তামান্না হাতুন নামে এক নারী। ওই নারীর অভিযোগ, ‘আইডিয়াল ম্যারেজ ব্যুরো’ নারীদের এক-দুই মাসের জন্য কন্টাক্টে বিয়ে দেয় কিছু কিছু বড়লোকের সঙ্গে। তারা যখন তাকে ছেড়ে দেয়, তখন প্রশ্ন করলে বলে, ‘বউ বেশি তর্ক করে তাই ছেড়ে দিয়েছি।’ গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকালে ‘তামান্না হাতুন’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে এ অভিযোগ করা হয়। পোস্টে লেখা হয়, ‘আমি মুফতি মামুনুর রশিদ কাসেমীর তৃতীয় নম্বর স্ত্রী। গত এক বছর যাবত তার সঙ্গে আমার মৌখিক বিবাহের মাধ্যমে সংসার করি। দশ হাজার টাকা কাবিন দিয়ে। তা নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই।’ ‘Ideal Marriage Bureau-(IMB)-এর মাধ্যম মেয়েদেরকে সংসার দেবে, সেটা ওরা ওয়াদা করে। তাদের দুঃখ কষ্ট তারা দেখবে। কিন্তু এসবের পেছনে তারা সেসব নারীকে এক-দুই মাসের জন্য কন্টাক্টে বিয়ে দেয় কিছু কিছু বড়লোকের সঙ্গে। তারা যখন তাকে ছেড়ে দেয় তখন প্রশ্ন করলে বলে, বউ বেশি তর্ক করে তাই ছেড়ে দিয়েছি।’ ‘একদিক দিয়ে নারীদেরকে ঘর সংসার দেবে বলে, আরেকদিকে ইচ্ছাকৃতভাবে নারীদেরকে ব্যবহার করে, তাদের সংসার নষ্ট করার পরিকল্পনা করে। এসব নিয়ে তর্ক করতে গেলে তার সঙ্গে আমার ঝামেলা হয় এবং একপর্যায়ে মুখে তালাক দেয়। তারপরও আমি আশায় ছিলাম আমার সঙ্গে সংসার ঠিক হয়ে যাবে এবং তার সঙ্গে আমার তালাক হওয়ার পরও সে আমার সঙ্গে অবৈধভাবে মেলামেশা করে এই বলে যে, সে সবকিছু ঠিক করে নেবে এবং সেসময় আমার গর্ভে একটি বাচ্চাও আসে। বাচ্চা আসার আগে সে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয় এবং আমি আমার মামার বাসায় যাই।’ ‘কয়দিন পর আমি যখন ডাক্তারের কাছে যাই, তখন এ খবর পাই যে, আমি গর্ভবতী এবং সেটা আমি তাকে জানাই। সে আমাকে বলে, ‘এটা অবৈধ সন্তান, এটা পৃথিবীতে এলে তোমার আর আমার জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। এই বাচ্চা ফেলে দাও, আমি সবকিছু ঠিক করে ফেলব।’ সে আর তার দুলাভাইয়ের প্রথম স্ত্রী আমাকে জোর করে ওষুধ খাওয়ায়।’ ‘বাচ্চা নষ্ট হওয়ার তিন দিন পর সে কুষ্টিয়াতে গিয়ে একটি ১৩ বছরের মেয়েকে বিয়ে করে এবং সেই বিষয়টি এখনো পাবলিশ করেনি অনলাইনে। ১৪/১০/২০২৫ আমি তার বিরুদ্ধে একটি মামলা জমা দেই। আমি আশা করছি এটার ভালো ফলাফল পাব।’ ‘ইমাম উদ্দিন আমার সৎবাবা, আমার মাকে কেউ হুমকি দেয় যে, তোমার মেয়ে যদি অনলাইনে এসে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাহলে আমি তোমাকে সঙ্গে সঙ্গে তালাক দিয়ে দেব।’ ‘আপনারা যতটুকু জানেন, আমি এই আইডি থেকে সব পজিটিভ পোস্ট করতাম ওদেরকে নিয়ে এবং অনেক মা-বোন এসেছেন এবং আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। একটা সময় মনে হতো আমি সব থেকে ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, পৃথিবীর সব থেকে নিকৃষ্ট কাজের সঙ্গে আমি যুক্ত আছি।’ ‘আমি চাইলেই আমার জীবন নতুন করে শুরু করতে পারতাম। কিন্তু ওদেরকে না থামাইলে, নারীদের সঙ্গে ওরা এরকমই প্রতারণা করবে। সে যে মিথ্যা মামলা করেছে, সেটা নিয়ে আমি বিস্তারিত প্রসাশনের সঙ্গে কথা বলব।’ এলএইস/ |