
|
যেসব আমলে নবীজি সা. এর স্বপ্ন দর্শনের আশা করা যায়
প্রকাশ:
২০ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:৪০ রাত
নিউজ ডেস্ক |
||মুফতী আবদুল কাদের মাহমুদ কাসেমী|| রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম— মানবতার গর্ব, সৃষ্টিজগতের জন্য পরম রহমত, মুমিন হৃদয়ের প্রকৃত ভালোবাসা। তাঁর অনুসরণেই মানুষের মুক্তি; তাঁর ভালোবাসাতেই ঈমানের পরিপূর্ণতা। নিষ্ঠুর পৃথিবীর বুক থেকে তিনি চলে গেলেও তাঁর স্মৃতি, তাঁর স্নেহ, তাঁর অনুপম রূপের আকর্ষণ এখনো প্রতিটি ঈমানদারের হৃদয়ে সজীব ও দীপ্তিমান। প্রতিটি মু’মিনের আকাঙ্ক্ষা—প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র চেহারার দর্শন লাভ করা, অন্তত স্বপ্নেই তাঁর নূরানী রূপকে দেখতে পাওয়া। এ সৌভাগ্য নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলার দয়া ও প্রেমে সিক্ত এক অমূল্য নিয়ামত—যাকে ইচ্ছা, যেভাবে ইচ্ছা, তিনি সেই অনুপম অনুগ্রহে ভূষিত করেন। কুরআন ও সুন্নাহতে এমন বহু নেক আমলের ইঙ্গিত রয়েছে, যা পালন করলে বান্দা আল্লাহর কাছে প্রিয় হয়; আর সেই প্রিয়ত্বের বরকতেই আল্লাহ কখনো স্বপ্নে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে দর্শন করিয়ে দেন। তবে স্মরণ রাখতে হবে—এ অনুগ্রহ সম্পূর্ণই খোদায়ি নির্বাচন; বান্দার তাওহীদমাখা হৃদয়, নবীপ্রেমে ভরা জীবন ও সুন্নাহনিষ্ঠ আমলই হতে পারে এর প্রকৃত পথপ্রদর্শক। স্বপ্নযোগে রাসূলসল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দেখার শরয়ী প্রমাণ পবিত্র কুরআনের আলোকে আল্লাহ তায়ালা বলেন- لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِّنْ اَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ অর্থাৎ “নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্য থেকে একজন রাসূল তোমাদের কাছে এসেছেন… তিনি মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু ও দয়ার্দ্র।” এই আয়াত মুমিন হৃদয়ে নবীপ্রেম জাগিয়ে তোলে এবং তাঁর নৈকট্যের দিকে আহ্বান করে। সহীহ হাদীসের আলোকে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَخَيَّلُ بِي ১️/ অধিক পরিমাণে দরূদ ও সালাম পাঠ إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاةً অর্থাৎ “কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে সে ব্যক্তি—যে সবচেয়ে বেশি আমার উপর দরূদ পাঠ করেছে।” প্রিয় নবীর স্মরণ যত অধিক হবে, নৈকট্য লাভের সম্ভবনা তত গভীর হবে—দুনিয়াতেও, আখিরাতেও। ২️/ পূর্ণভাবে সুন্নাহর অনুসরণ আল্লাহ তায়ালা বলেন— সুন্নাহ মেনে জীবন গড়া মানেই আল্লাহ ও রাসূলের ভালোবাসার আলোয় হৃদয় আলোকিত করা। ৩️/ রাতের তহাজ্জুদ, কান্নাকাটি ও বিশেষ দুআ وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَكَ অর্থাৎ “আর রাতের কিছু সময় তুমি তার সাথে (আল্লাহর উদ্দেশ্যে) তহাজ্জুদ নামাজ পড়; এটি তোমার জন্য অতিরিক্ত নেকী।” (সূরা বনী ইসরাঈল: ৭৯) রাতের শেষ তৃতীয়াংশ— ৪️/ তাকওয়া অর্জন ও গুনাহ বর্জন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন— হৃদয় গুনাহের ঝংকার থেকে যত পবিত্র হবে, প্রিয় নবীর দর্শন লাভ তত সহজ হবে। ৫️/ যিকির, ইস্তিগফার ও সালাতুল-লায়েল فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ যার হৃদয়ে সর্বক্ষণ আল্লাহর স্মরণ থাকবে, ৬️/ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বেদনার্ত ভালোবাসা الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ দুনিয়ার প্রেম- ভালোবাসা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে স্বপ্নযোগে দর্শনের বিশেষ প্রয়োজন হলো বেশি বেশি দোয়া করা। দোয়া: اللّٰهُمَّ ارْزُقْنِي رُؤْيَةَ نَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ ﷺ فِي الْمَنَامِ আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাঁর প্রিয় নবীর সাক্ষাৎ লাভে ধন্য করুন। লেখক: ফাযেল, দারুল উলুম দেওবন্দ, ইউ.পি., ইন্ডিয়া এলএইস/ |