সৌদি যুবরাজের পক্ষেই সাফাই গাইলেন ট্রাম্প
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:০৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। অনেকেই মনে করেছিলেন, এ ঘটনায় তিনি বিশ্বমঞ্চে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তবে সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে যুবরাজকে স্বাগত জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন—খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুবরাজ “কিছুই জানতেন না।” তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসে মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, যুবরাজ খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন, এবং এ বিষয়ে এমন প্রশ্ন করা উচিত নয় যাতে তিনি বিব্রত হন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক সহযোগিতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়গুলো প্রধান আলোচ্য ছিল। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল—খাশোগিকে গ্রেপ্তার বা হত্যার পরিকল্পনায় যুবরাজ অনুমোদন দিয়েছিলেন। যদিও যুবরাজ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং সৌদি আরব সরকার জানায়, তারা হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র তখন কয়েকজন সৌদি কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও যুবরাজের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বৈঠকে ট্রাম্প ও যুবরাজ পারমাণবিক শক্তি, এআই প্রযুক্তি এবং সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। যুবরাজ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ ৬০০ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হচ্ছে। এছাড়া সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। ট্রাম্প বলেন, রপ্তানি লাইসেন্স এখনো অনুমোদন পায়নি, তবে তিনি আশা করছেন সৌদি আরব ও লকহিড মার্টিনের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি শিগগিরই সম্পন্ন হবে।

এদিকে কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তা মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন—এফ-৩৫ বিক্রি ইসরায়েলের সামরিক আধিক্যে প্রভাব ফেলতে পারে বলে তারা মনে করছেন। তবে ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি আরবকে যে সংস্করণটি বিক্রি করা হবে তা ইসরায়েলের ব্যবহৃত সংস্করণের প্রায় কাছাকাছি হবে। তিনি বলেন, “সৌদি আরব আমাদের বড় মিত্র, ইসরাইলও বড় মিত্র। আমি জানি, ইসরাইল চাইবে আপনাদের তুলনামূলক কম সক্ষমতার বিমান দেওয়া হোক।”

সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি

এলএইস/