ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ব্যতীত দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব নয়: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর, ২০২৫, ০২:১৩ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘‘ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ব্যতীত দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব নয়”। তিনি বলেন, বিগত সময়ে যেসব দল সরকার গঠন করে তারা নিজস্ব মতবাদে, নিজস্ব তন্ত্র-মন্ত্রে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। নিজস্ব মতবাদে জাতি উপকৃত হয় না, নিজেরাই উপকৃত হয়। ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ হলে সমাজ পরিচালিত হবে আল্লাহর দেওয়া বিধানে। যেই বিধানে কোনো দল এককভাবে উপকৃত হওয়ার সুযোগ নেই। আল্লাহর আইনে প্রতিটি নাগরিক সমানভাবে উপকৃত হবে। মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী খিলগাঁও উত্তর থানার (৩ নং ওয়ার্ড) উদ্যোগে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠণের লক্ষ্যে ঢাকা-৯ সংসদীয় এলাকার বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এদেশে আল্লাহর আইন কায়েমের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বৈষম্য দূর করে একটি কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে আন্দোলন -সংগ্রাম করে আসছে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর এই সংগ্রাম চলতেই থাকবে। জামায়াতে ইসলামী জাতিকে একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র উপহার দিতে চায়। আগামী নির্বাচনে জনগণ যদি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিয়ে জামায়াতে ইসলামীকে সরকার গঠনের সুযোগ দেয় তবে আমরা দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করবো। দুর্নীতি, চাঁদাবাজ সন্ত্রাস মুক্ত এবং ক্ষুধা, দারিদ্র ও বেকারত্ব দূর করে একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে দেশকে গড়ে তোলা হবে। জাতির প্রত্যাশিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি দেশবাসীকে আহ্বান জানান।
 
মতবিনিময় সভার প্রধান আলোচক ঢাকা-৯ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী কবির আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে অনেক সরকার আসছে-গেছে, কেউ ৬ দফা, কেউ ১৮ দফা, কেউ ৩১ দফার কথা বলে জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ছাড়া কোনো দফা বাস্তবায়ন করেনি। জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ করাই তাদের আসল উদ্দেশ্য। মানুষের তৈরি মতবাদে কখনো অন্য মানুষ বা জনগণ উপকৃত হয়নি। বরং যিনি আইন তৈরি করেন তিনি নিজের ও নিজ দলের স্বার্থ রক্ষায় আইন তৈরি করেন। যার বাস্তবতা বিগত ৫৪ বছর। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে রাষ্ট্র আল্লাহর বিধানে পরিচালিত হবে। আল্লাহর আইনে কোনো বৈষম্য নেই। একক কাউকে সুবিধা দেওয়া এবং কাউকে বঞ্চিত করার সুযোগ নেই। সকলের জন্য সমান অধিকার। আল্লাহ আইনে দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর কোনো ভিন্নতা নাই। মানুষ হিসেবে সকলেই সমান অধিকার ও মর্যাদা লাভ করবে। ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সকল বৈষম্যের শিকল ভেঙ্গে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে তিনি উপস্থিত সকলকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

ঢাকা-৯ সংসদীয় এলাকাকে নতুন বাংলাদেশের মডেল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যত্যয় করে স্থানীয়দের জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক শহর উপহার দেওয়াই জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার। তিনি আরও বলেন, অতীতে যারা এমপি হয়ে ঢাকা-৯ আসনের জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে, ব্যাংক-বীমার মালিক হয়েছে, নিজ নামে স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা বাণিজ্য করেছে তাদেরকে আর ভোট দেওয়া যায় না। এরা আবারো সুযোগ পেলে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলবে। জামায়াতে ইসলামীতে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজের স্থান নেই। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাস মুক্ত, চাঁদাবাজ মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। জামায়াতে ইসলামীকে পরীক্ষামূলক একবার নির্বাচিত করা আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার, জাতি পাবে নিরাপদ এক কল্যাণ রাষ্ট্র। জুলাইয়ের শহীদদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সমর্থন দিতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

মহানগরীর মজলিসে শুরা সদস্য ও খিলগাঁও উত্তর থানা আমীর মো. নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এবং থানা বায়তুলমাল সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের পরিচালনায় রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা-৯ আসন পরিচালক মো. ফরিদুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর মজলিসে শুরা সদস্য যথাক্রমে এস.এম মাহমুদ হাসান, আশরাফুল আলম ইমন, মাওলানা মাহমুদুর রহমান, মো. জুলফিকার আলী, ৩ নং ওয়ার্ডে জামায়াত সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম । এছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দসহ বাড়িওয়ালা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এলএইস/