ভোটে দায়িত্ব কাজ স্মরণে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বসছে ইসি
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:১২ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কার কী কাজ, তা স্মরণ করিয়ে দিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে আলোচনা সভা ডেকেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ সভা হবে আগামী ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকালে।

ভোটের কাজে সম্পৃক্ত ৩১টি মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের সচিব এবং অধিদপ্তর ও কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক-চেয়ারম্যানদের নিয়ে হবে এ সভা।

ইসির রোডম্যাপে বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি, আইনশৃঙ্খলা শান্তিপূর্ণ রাখা, ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, ভোটকেন্দ্র থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিশেষ খামে ইসিতে ভোট গণনার বিররণী পাঠানো, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ নানা কার্যক্রমের প্রস্তাবনা প্রস্তুতের লক্ষ্যে এ সভা হবে।

তফশিল ঘোষণার ১৫ দিন আগে হবে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় সভা, তাতে নিয়োগ পরিকল্পনা, সমন্বয় ও দিক নির্দেশনা তুলে ধরা হবে।

ভোটার তালিকা, সীমানা নির্ধারণ, দল নিবন্ধন, আইনি সংস্কার, সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা, নীতিমালা-বিধিমালা জারি, সংলাপ, সরঞ্জাম কেনাকাটা, প্রশিক্ষণ, পোস্টাল ব্যালটে ভোট পদ্ধতি ও প্রচারসহ সার্বিক বিষয় গুছিয়ে আনার মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হতে যাচ্ছে।

প্রাক-প্রস্তুতি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও এক দফা মত বিনিময় করেছে ইসি। রোববার নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, রোডম্যাপ ধরে সব ধরনের প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আতঙ্কিত বা দুশ্চিন্তায় পড়ার মতো কোনো কারণ আমি দেখছি না।

“কর্মপরিকল্পনার সময় অনুযায়ী দিনক্ষণ মেপে কোনো কাজ করা সম্ভব নয়। পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু জায়গায় সমন্বয় করতে হয়। কিছু কিছু বিষয় আগে করা হয়েছে; কিছু কিছু বিষয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে, আর কিছু কিছু বিষয়ে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।

বৃহস্পতিবার আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

আগামী বছর রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ ধরে প্রস্তুতিমূলক কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফশিল ঘোষণার কথা রয়েছে।

আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা

ইসির নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

৩১টি মন্ত্রণালয় বিভাগের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রাক প্রস্তুতিমূলক সভা ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩ টায়) ইসি ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে এ সভায় চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন।

এতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, গভর্নর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয়ক ও সংস্কার সচিব, অর্থ সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব, কৃষি সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সচিব ও জাতীয় সংসদ সচিবালয় সচিবকে বৈঠকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া ডাক অধিদপ্তর মহাপরিচালক, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার মহাপরিচালক, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং কারা অধিদপ্তরের কারা মহাপরিদর্শককেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভোটে এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের লোকবল যেমন দরকার হয়, তেমনি তফসিল ঘোষণার থেকে মনোনয়নপত্র গ্রহণ, বাছাই থেকে নির্বাচন সামগ্রী পাঠানো, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যালট পেপার আনা নেওয়া, ভোটের ফল ও গণনা প্রকাশসহ সার্বিক কাজে সবার সম্পৃক্ততা রয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ঘোষিত রোডম্যাপ ধরে কাজের অগ্রগতি এবং কার কী কাজ, তা মনে করিয়ে দেওয়া হয় এ ধরনের সভায়। সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়ার পাশাপাশি কাজের সমন্বয়ে কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, যাতায়াত, গণমাধ্যম, প্রচার-প্রচারণা, পররাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও ঋণ খেলাপিসহ সব বিষয়ে আলোচনা হয়ে থাকে।

এলএইস/