ইসলামি দলগুলো আদর্শিক দেউলিয়াপনার পরিচয় দেয় কেন?
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:০৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

||খতিব তাজুল ইসলাম||

সকল ইসলামিক দলের মাহাসল বা সারসংক্ষেপ যেন একটি নির্বাচন ও এক দুটি সিট। নির্বাচন ও সিট ভিক্ষা তাদের ভুলিয়ে দেয় আদর্শ ও সকল নৈতিকতা। সেক্যুলার ও পরীক্ষিত লুটেরাদের সাথে দহরম মহরম ইবাদতে রূপান্তরিত হয়।

ইসলামি রাজনীতিবিদরা খেলাফতে রাশেদা বা কোরআন সুন্নাহর বিধানের স্বপ্ন দেখাতে দেখাতে দিনশেষে এসে আদর্শিক দেউলিয়াপনার পরিচয় দেয়। কিন্তু কেন?

আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম নির্বাচনের হয়ে ওঠে লুটেরাদের পদলেহন আর চাটাচাটি! কিন্তু কেন?

ঠিকাছে, ইসলামি হুকুমত কায়েম করতে অক্ষম। সংসদে মেজরিটি পাওয়া দুষ্কর। তাইলে ২/৩/৪/৫টি সিট নিয়ে করবেনটা কি?

তারচেয়ে ভালো হয় না যে শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ. আওয়ামী লীগের সামনে যে ৫ দফা দাবি রেখে নির্বাচনী ঐক্যের প্রয়াস চালিয়েছিলেন সেই কাজটা এখনো কোনো লুটেরাদের সাথে করা যায় না?

যেমন:

১- প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা হ্রাস করে সংসদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। (একক ক্ষমতা মানুষকে ফেরাউনে পরিণত করে)। তেমনিভাবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বিলুপ্ত করতে হবে।

২- দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ। কঠোরভাবে দুর্নীতি দমন ও আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে। যাদের ওপর দুর্নীতির অভিযোগ তারা কোনোভাবেই সরকারি ও পাবলিক সার্ভিসে সংসদে কোথাও আসতে পারবে না। সে সুযোগ আইনের মাধ্যমে বন্ধ করতে হবে।

৩- প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সরকারি স্কুলগুলোতে ইসলামি ভাবাদর্শভিত্তিক সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে। উপরের দিকে ক্রমান্বয়ে। সংখ্যালঘুদের জন্য মালেশিয়ার অনুকরণে নিজস্ব স্কুলের সুবিধা প্রদান চালু করতে হবে। সকল প্রাইভেট বা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্ধেক খরচ সরকার বহন করতে হবে। তাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। তেমনি মসজিদগুলোতে ইমাম ও মুয়াজ্জিনের জন্য বেতন ভাতা চালু করতে হবে।

৪- বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করে দিতে হবে। সরকার বা অন্য কেউ বিচারিক কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। যেকোনো সিরিয়াস মামলা যেমন খুন ধর্ষণ ডাকাতি ৯০ দিনের ভেতর বিচারকার্য সম্পাদনের সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে।

৫-  দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাব্যবস্থা উপযুক্ত উন্নত ও নিশ্চিত করতে হবে। ডাক্তারদের টেস্ট ও ঔষধ বাণিজ্যে লাগাম টেনে ধরতে হবে। দেশের সকল নাগরিকের জন্য  ন্যূনতম চিকিৎসা কার্ড বাবদ ৫ লক্ষ টাকার মত ক্রেডিট গ্রান্ড দিতে হবে।

এই ৫টি দাবি যদি লিখিতভাবে সকলে মিলে বৃহৎ দলের কাছ থেকে আদায় করে নিতে পারেন তাহলে কি কম হবে? ইজ্জত ধুলায় মিশবে? ২/৩টি সিটের চেয়ে কোটিগুণ মূল্যবান হবে না?

৫০টি সিট নিয়েও তো আপনি কিছু করতে পারবেন না। আর যদি তাদের তল্পিবাহক হয়ে নির্বাচন করেন তাইলে তো আম যাবে, সাথে যাবে ছালাটাও।

সত্যিই যদি দেশপ্রেম দ্বীনপ্রেম মানবতার প্রেম থাকে, দেশ ও জাতির প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা থাকে তাহলে তাই করবেন আপনি।

পাস করার পর তারা যদি আপনার সাথে বেঈমানি করে তাহলে আন্দোলনের মহাসুযোগ তৈরি হবে। জনতার কলিজায় হবে আপনার স্থান ইনশাআল্লাহ।

লেখক: আলোচক, চিন্তক ও সংগঠক

এলএইস/