আশ্বাসে সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের অনশন কর্মসূচি স্থগিত
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৫৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

গ্রেড ও পদোন্নতি নিয়ে জটিলতা নিরসনের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হতে যাওয়া ‘আমরণ অনশন’ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। 

প্রাথমিক শিক্ষকদের মোর্চাভুক্ত সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, উপদেষ্টা মহোদয় ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের দাবি-দাওয়া পূরণে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন এবং পে কমিশনের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ করে দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন। 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে প্রেস ক্লাবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের অনশন শুরু হলে 'বড় ঝামেলা সৃষ্টি হবে' বলে তাদের আশ্বস্ত করা হয়। 'সার্বিক বিবেচনায় ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন,' বলেন আনিসুর রহমান।

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ প্রধানত তিনটি দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল, সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন, এবং প্রধান শিক্ষকের শতভাগ পদে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি দেওয়া। 

বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষক নেতারা আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, 'আমরা দীর্ঘ সময় শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে কথা বললাম। তারা ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবি করছেন, আমরা একমত, আমরা মনে করি তাদের এ দাবি যৌক্তিক।'

মহাপরিচালক শামসুজ্জামান আরও জানান, উপদেষ্টা মহোদয় এই দাবির বিষয়ে পে কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং লিখিত আকারে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছেন। উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসনের বিষয়ে তিনি বলেন, অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থ সচিবের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং তারা পে কমিশনের সুপারিশ পেলে তা সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন, তাই পে কমিশনের সঙ্গে শিক্ষকদের আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

পদোন্নতির বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মামলার কারণে সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি পাচ্ছেন না, তবে মামলাটি কিছুদিন আগে সরকারের পক্ষে শুনানি হয়েছে। শিক্ষকদের পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে নির্দিষ্ট যোগ্যতা সাপেক্ষে প্রধান শিক্ষকদের একটি অংশকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

সব মিলিয়ে, ৯টি শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে অধিদপ্তর তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে। উল্লেখ্য, দেশে ৬৭ হাজার ৫৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। 

গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়।

এনএইচ/