ইসরয়েলের সঙ্গে গোপনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল ছয় আরব দেশ
প্রকাশ:
১৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৪৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের নিন্দা করলেও, গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আরব রাষ্ট্র নীরবে ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করেছিল—ফাঁস হওয়া মার্কিন নথিতে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। শনিবার (১১ অক্টোবর) দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধ চলাকালে আরব সরকারগুলো প্রকাশ্যে ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান নিলেও, একই সময়ে তারা গোপনে ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক ও গোয়েন্দা সহযোগিতা বজায় রেখেছিল। মার্কিন প্রভাবশালী এই দৈনিক এবং ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)-এর হাতে আসা ফাঁস হওয়া নথি অনুসারে, অন্তত ছয়টি আরব দেশ—সৌদি আরব, মিশর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও কাতার—‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা গঠন’ (Regional Security Architecture) নামে পরিচিত এক গোপন প্রতিরক্ষা কাঠামোর অংশ ছিল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কুয়েত ও ওমান ভবিষ্যতের সম্ভাব্য অংশীদার হিসেবে ওই কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পথে রয়েছে। গত তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইসরায়েল ও এই ছয় আরব দেশের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা বাহরাইন, মিশর, জর্ডান এবং কাতারে একাধিক গোপন পরিকল্পনা বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। সম্প্রতি ইসরায়েল ও হামাস একটি শান্তি কাঠামোর প্রথম ধাপে সম্মত হয়েছে। এর আওতায় হামাসের হাতে আটক সব বন্দিকে মুক্তি এবং গাজা থেকে আংশিক ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে ইসরায়েলে ২০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে, এবং ওই নিরাপত্তা কাঠামোর সদস্য কয়েকটি আরব দেশের সেনারাও এতে অংশ নেবে। এর আগেই উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ গাজা যুদ্ধের অবসানে ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়। পরিকল্পনাটিতে আরব রাষ্ট্রগুলোকে গাজায় একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন ও নতুন ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনী গঠনে প্রশিক্ষণ প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে। ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, ‘ইরানের সৃষ্ট হুমকি’ ইসরায়েল-আরব সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার মূল প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এই সম্পর্ক রক্ষায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে। একটি নথিতে ইরান ও তার মিত্রদেরকে ‘অ্যাক্সিস অব ইভিল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে; অন্য এক নথিতে গাজা ও ইয়েমেনে ইরানি প্রভাবাধীন ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির মানচিত্র সংযুক্ত রয়েছে। আইসিআইজে ও দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, তারা মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের অফিসিয়াল রেকর্ড, আর্কাইভ করা সামরিক নথি ও অন্যান্য উন্মুক্ত সূত্রের সঙ্গে তথ্য যাচাই করে নথিগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। প্রকাশিত সামরিক মহড়া ও বৈঠকের সময়সূচিও মার্কিন সামরিক বাহিনীর ঘোষিত তথ্যের সঙ্গে মিলে গেছে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে সেন্টকম, ইসরায়েল এবং সংশ্লিষ্ট ছয় আরব দেশ কেউই রাজি হয়নি। এনএইচ/ |