এটাচ বাথরুমে অযুর দুআ করা যাবে?
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৪৩ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

||লাজ্জাস আল-হাবীব||

আজকাল অনেক ঘরে বাথরুম ও টয়লেট একসাথে বা পাশাপাশি থাকে, যাকে “এটাস্ট বাথরুম” বলা হয়। এই অবস্থায় অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে। এমন স্থানে অযুর আগে বা মধ্যে দোয়া, কিংবা অযু শেষে কলেমা শাহাদাহ পড়া যাবে কি না?

ইসলাম বলে, নাপাক স্থানে [যেমন টয়লেট, যেখানে পয়ঃনিষ্কাশন হয়] আল্লাহর নাম, কুরআনের আয়াত, দোয়া বা দরুদ শরিফ মুখে উচ্চারণ করা নিষেধ।

কারণ এগুলো আল্লাহর নাম ও পবিত্র বাণী, যেগুলোর মর্যাদা রক্ষা করা ফরজ-সদৃশ কর্তব্য।

হাদীসে আসছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যখন তোমাদের কেউ টয়লেটে যাবে, তখন সে যেন এই দোয়া পাঠ করে "আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবায়িছ" অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই পুরুষ ও নারী শয়তান থেকে। [সহিহ বুখারী, হাদীস: ১৪২ / সহিহ মুসলিম, হাদীস: ৩৭৫]

ইমাম তাহতাবি রহিমাহুল্লাহ বলেন: যে ব্যক্তি টয়লেটে প্রবেশ করবে, সে যেন বাম পা আগে দিয়ে প্রবেশ করে, মাথা ঢেকে রাখে [এটা মুস্তাহাব]। কারণ টয়লেট এমন জায়গা যেখানে শয়তান উপস্থিত থাকে। এজন্য প্রবেশের আগে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত। [হাশিয়াতুত তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ, পৃষ্ঠা ৫১]

তিনি আরও বলেন: যদি জায়গাটি নির্দিষ্ট টয়লেট হয়, তবে ভিতরে ঢোকার আগে দোয়া পড়বে।

আর যদি খোলা জায়গায় হয় [যেমন মাঠে], তাহলে কাপড় তোলার আগে দোয়া পড়বে। যদি ভুলে যায়, তবে মনে মনে দোয়া পড়বে; কিন্তু মুখে নয়—আল্লাহর নামের সম্মানের জন্য। [হাশিয়াতুত তহতাবি, মারাকিল ফালাহ – পৃষ্ঠা ৫১]

ইবনে আবেদীন শামী রহিমাহুল্লাহ বলেন: যদি কেউ টয়লেটের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং তখন মনে পড়ে, তাহলে সে দোয়া মনে মনে পড়বে, কিন্তু জিহ্বা নড়াবে না—এটা আল্লাহর নামের সম্মানের জন্য। [রদ্দুল মুহতার, কিতাবুত তাহারাহ, বাবু সুন্নানিল উযূ – ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২২৭]

মোট কথা: এটাস্ট বাথরুমে অযু বা গোসল করা সম্পূর্ণ বৈধ, কিন্তু যদি টয়লেট ও গোসলের স্থান একত্রে হয় এবং আলাদা দেয়াল বা পর্দা না থাকে, তাহলে সেখানে মুখে কোনো দোয়া বা আল্লাহর নাম নেওয়া যাবে না, শুধু মনে মনে বলা যাবে। আর যদি টয়লেটের অংশ আলাদা করা থাকে মাঝে দেয়াল বা পর্দা দিয়ে, তাহলে মুখে উচ্চারণ করে দোয়া, বিসমিল্লাহ বা কলেমা শাহাদাহ পড়া জায়েজ।

এনএইচ/