সিরিয়ায় প্রথম সংসদ নির্বাচনের ফল প্রকাশ
প্রকাশ:
০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৯:৩০ সকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করেছে সিরিয়া। দেশটির নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, নতুন সংসদে (পিপলস অ্যাসেম্বলি) নির্বাচিত সদস্যদের অধিকাংশই সুন্নি মুসলমান ও পুরুষ। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র নাওয়ার নাজমেহ জানান, মোট ১১৯ জন নির্বাচিত সদস্যের মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ নারী এবং দুইজন খ্রিষ্টান রয়েছেন। এতে প্রতিনিধিত্বের ভারসাম্য ও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নাজমেহ বলেন, “নারীদের সংখ্যা সিরীয় সমাজে তাদের অবস্থান ও ভূমিকার তুলনায় যথেষ্ট নয়। খ্রিষ্টানদের প্রতিনিধিত্বও খুবই সীমিত।” ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী এই নির্বাচনকে দেশটির রাজনৈতিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে সমালোচকদের মতে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন মূলত প্রভাবশালী ও ঘনিষ্ঠ মহলের প্রার্থীরা, ফলে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রূপান্তর এখনো দূরের বিষয়। এবারের নির্বাচন হয়েছে পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে। যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে সঠিক জনসংখ্যা নির্ধারণ কঠিন হওয়ায় সরকার সরাসরি ভোট পদ্ধতি গ্রহণ করেনি। প্রায় ৬ হাজার নির্বাচক সদস্য আঞ্চলিক ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে পূর্বনির্ধারিত প্রার্থীদের মধ্য থেকে সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য নির্বাচন করেছেন। বাকি এক-তৃতীয়াংশ সদস্য প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা নিয়োগ দেবেন। নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক কারণে কুর্দি অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চল এবং দ্রুজ নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণাঞ্চল সোয়্যাইদা প্রদেশে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এতে সংসদের ২১টি আসন শূন্য রয়েছে। নাজমেহ জানান, পরবর্তীতে পরিপূরক নির্বাচন আয়োজন করে এসব আসন পূরণ করা হবে। আল-জাজিরার দামেস্ক প্রতিনিধি ওসামা বিন জাভেদ জানান, কুর্দি ও দ্রুজ জনগোষ্ঠী নির্বাচনে নিজেদের অংশগ্রহণ না থাকার অভিযোগ তুলেছে। তবে দামেস্ক, আলেপ্পো ও হামার মতো বড় শহরের অনেক নাগরিক এটিকে ‘প্রকৃত নির্বাচনের প্রথম অভিজ্ঞতা’ হিসেবে দেখছেন। বর্তমানে সিরিয়ার প্রায় ৭৫ শতাংশ জনগণ সুন্নি মুসলমান। পূর্বতন আসাদ সরকার ছিল সংখ্যালঘু আলাওয়াইত সম্প্রদায়ের। মধ্যাঞ্চলীয় হোমস শহর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নুর আল-জানদালি বলেন, “নতুন সংসদের সামনে বড় দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে হবে, যেখানে থাকবে স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার ও ন্যায়বিচার।” তিনি আরও বলেন, “নীতিনির্ধারণে নারীদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা জরুরি।” এনএইচ/ |