জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৈঠকটি আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে।

সূত্র জানিয়েছে, **বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)**সহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল এতে অংশ নেবে। কমিশন আশা করছে, আজকের বৈঠকেই সমাধানের পথ মিলতে পারে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে কমিশন গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা শুরু করে। তবে তিন দফা বৈঠক শেষে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। মূল খসড়ার ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত হলেও বাস্তবায়নের ধাপ নির্ধারিত হয়নি।

আইন বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন—

সংবিধান আদেশ জারি, গণভোট আয়োজন, সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন বা সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিমকোর্টের মতামত নেওয়া। আজকের বৈঠকে এই প্রস্তাবগুলোই আলোচনার টেবিলে উঠবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

কমিশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কয়েকটি দল কমিশনের বাইরে বসেও সমাধানের চেষ্টা করছে। তবে ঐকমত্য না হলে কমিশন আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শসহ চূড়ান্ত প্রতিবেদন সরকারে জমা দেবে। সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আরও এক দফা বৈঠক হতে পারে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে কমিশন প্রস্তাব দিয়েছিল— অন্তর্বর্তী সরকার চাইলে সংবিধান আদেশের মাধ্যমে মৌলিক সংস্কার করতে পারে, পাশাপাশি নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করা সম্ভব। তবে অধিকাংশ দল এতে একমত হয়নি।

বিএনপির মতে, রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশে সাংবিধানিক সংস্কার সম্ভব নয়—আইনি চ্যালেঞ্জে তা টিকবে না। তবে তারা পরামর্শ দিয়েছে, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারের মতোই সাংবিধানিক আদেশে মতামত নেওয়া যেতে পারে।

জামায়াতে ইসলামী চায়—সংবিধান আদেশে সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের আগেই গণভোট হোক।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চায়—গণপরিষদ নির্বাচন।

অন্যদিকে বাম দলগুলো বিশেষ আদেশে সংস্কারের বিরোধিতা করছে।

কমিশনের মেয়াদ ১৫ অক্টোবর শেষ হচ্ছে। তার আগেই জুলাই সনদের চূড়ান্ত রূপ দিতে চায় কমিশন।

এনএইচ/