জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না: ইবনে শাইখুল হাদিস
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:৫১ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির (ইবনে শাইখুল হাদিস) মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, এই মুহূর্তে আমাদের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি হলো জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন। ইনশাআল্লাহ, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তা জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হবে—এমন প্রত্যাশাই করছি।

শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর পুরানা পল্টনের ফেনী সমিতি মিলনায়তনে সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। যারা জুলাই সনদের আন্দোলনে নেই, তাদের সঙ্গে এই মুহূর্তে আমাদের কোনো রাজনৈতিক বোঝাপড়ার প্রশ্নই ওঠে না। আর জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পথে যারা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে, তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার ঐক্যের সম্পর্ক আমাদের থাকতে পারে না।

ইবনে শাইখুল হাদিস বলেন, জুলাই সনদ যদি অবিলম্বে বাস্তবায়ন না হয়, তবে তা কেবল একটি কাগজের দলিল হিসেবেই থেকে যাবে। ভবিষ্যতের কোনো সরকার এটি বাস্তবায়ন করবে এমন ভরসা নেই। সুতরাং, জুলাই বিপ্লবকে সার্থক করতে হলে জুলাই সনদ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এর ভিত্তিতেই আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি।

প্রশিক্ষণ মজলিসে অংশগ্রহণকারী ডেলিগেটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মাঠে থেকে আন্দোলনকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো কর্মীদের দায়িত্ব। তিনি বলেন, আমাদেরকে টার্গেট ভিত্তিক কাজ করতে হবে। সংগঠনের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে টার্গেট কেন্দ্রিকভাবে সংগঠিত ও পরিচালিত করতে হবে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দুটি টার্গেটে কাজ করছে—একটি দীর্ঘমেয়াদি এবং একটি স্বল্পমেয়াদি।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা; রাষ্ট্রে ও সমাজে সর্বত্র ইসলামী অনুশাসন কায়েম করা। আর স্বল্প মেয়াদে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলা এবং আনুগত্যশীল, সুশৃঙ্খল কর্মীবাহিনী তৈরি করা। সর্বপরি সকল পর্যায়ের জনশক্তিকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঘোষিত জুলাই সনদের অবিলম্বে বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবি সাধারণ মানুষের বোধগম্য ভাষায় উপস্থাপনের জন্য কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই দাবিগুলো দলীয় বা রাজনৈতিক সুবিধার জন্য নয়; বরং ফ্যাসিবাদের পথ রুদ্ধ করা এবং একটি সুন্দর, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনের জন্য।

এই লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশের খেলাফত মজলিস ঘোষিত আগামী দিনের প্রতিটি কর্মসূচিতে সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলালের সভাপতিত্বে এবং প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ মজলিসে আলোচনায় অংশ নেন নায়েবে আমির মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী।

অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মাওলানা কুরবান আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শরাফত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ হাদী, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ, অফিস সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন খান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ, সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নুর মুহাম্মাদ আজীজ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা মামুনুর রশীদ, মাওলানা আমজাদ হোসাইন, খন্দকার মাওলানা মঈনুল ইসলাম, মাওলানা আনোয়ার মাহমুদ, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন রাজী, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা রাকিবুল ইসলাম, মাওলানা মুর্শেদুল আলম সিদ্দীকি প্রমুখ।

প্রশিক্ষণ মজলিস শেষে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সর্বোচ্চ স্তরের জনশক্তি ‘নকীব’ হিসেবে বেশ কয়েকজনকে শপথ পাঠ করান মাওলানা মামুনুল হক।

আরএইচ/