এই মুহুর্তে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার শেষ ভরসা হয়ে টিকে আছে ‘ম্যারিনেট’ আর কত দূর?
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:০৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার শেষ ভরসা হয়ে টিকে আছে শুধুমাত্র দ্য ম্যারিনেট। ৬ আরোহী নিয়ে পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এ নৌযানটি এখনও ছুটে চলেছে গাজা অভিমুখে।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দখলদার ইসরায়েলের নৌ অবরোধ ভেঙে ক্ষুধাপীড়িত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে প্রায় ৪৫টি জাহাজে করে গাজার দিকে রওনা দিয়েছিলেন ৫০০ অধিকারকর্মী। তবে, ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে ঐতিহাসিক এ সমুদ্রযাত্রা এখন অনেকটাই ভেস্তে গেছে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর বাধার মুখে। ইতোমধ্যে একটি বাদে বাকি সবকটি জাহাজ ও সেগুলোতে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করে ইসরায়েলে নিয়ে গেছে দখলদার বাহিনী। এই মুহুর্তে  গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার শেষ ভরসা হয়ে টিকে আছে শুধুমাত্র দ্য ম্যারিনেট। ছয়জন আরোহী নিয়ে পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানটি এখনও ছুটে চলেছে গাজা অভিমুখে। 

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিএমটি ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা), ইসরায়েলি বাহিনী এখনও ইয়টটিকে আটক করতে পারেনি।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) বেগে ভেসে চলেছে ম্যারিনেট। গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব আর মাত্র ৪৩ নটিক্যাল মাইল বা ৮০ কিলোমিটার।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি এখন সারানো হয়েছে। 

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।  

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।

ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়, ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।

ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়। ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।

বুধবার (১ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাত থেকেই নৌযানগুলোতে অভিযান চালায় ইসরায়েল। ওইদিনই আটক করা হয় দুই শতাধিক যাত্রীকে। তাদের সবাইকে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলের কেটজিওট কারাগারে রাখা হয়। আটকদের মধ্যে সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও আছেন। 

আটক হওয়ার আগে ধারণ করা একটি ভিডিওতে গ্রেটা বলেন, ইসরাইলি বাহিনী আমাকে জোরপূর্বক আটক করেছে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে ইসরাইলে নিয়ে আসা হয়েছে। আমাদের উদ্যোগ মানবিক, অহিংস ও আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যেই ছিল। দয়া করে আমার দেশের সরকারকে বলুন যেন তারা আমার এবং অন্যদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি করে। 

ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, নৌবহরের যাত্রীরা সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন এবং বৈধ অবরোধ লঙ্ঘন করছেন। আটকদের ইউরোপে পাঠানো হবে বলেও জানানো হয়।

এদিকে, তেল আবিবের এমন পদক্ষেপে তুরস্ক, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কুয়েতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিন্দা জানিয়েছে। তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলছেন, এই জাহাজভরা ত্রাণে কোনো প্রভাব পড়বে না গাজা উপত্যকাবাসীর ওপর।

আরএইচ/