প্রতি বছর ১ বার হলেও যে রক্ত পরীক্ষাগুলো করা জরুরি
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:২২ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শরীরে যেকোনো ধরনের বড় জটিলতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বিশেষ করে রক্ত ​​পরীক্ষা, গুরুতর সমস্যা তৈরি করার আগে যেকোনো লুকানো সমস্যা সনাক্ত করার একটি ভালো উপায়।

সব ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নাও করতে পারেন, তবে এমন কিছু অপরিহার্য রক্ত ​​পরীক্ষা রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে সাহায্য করবে। এসব পরীক্ষা প্রাথমিক রোগ সনাক্তকরণ এবং কার্যকর চিকিৎসায়ও সহায়তা করে। এখানে কিছু রক্ত ​​পরীক্ষা দেওয়া হল যা আপনার প্রতি বছর একবার করা উচিত।

সম্পূর্ণ রক্ত ​​গণনা ( সিবিসি)

সিবিসি রক্তের লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা, হিমোগ্লোবিন এবং প্লাটিলেটের পরিমাপ জানতে সাহায্য করে। এটি রক্তাল্পতা, সংক্রমণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং এমনকি নির্দিষ্ট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলি সনাক্ত করতে সহায়তা করে।

রক্তে শর্করার পরিমাণ

এই পরীক্ষা আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করে। ফাস্টিং রক্তে শর্করার বর্তমান নিয়ন্ত্রণ দেখায়, আর এইচবিএ১ সি ২-৩ মাসে আপনার রক্তে গড় শর্করার মাত্রা দেখায়, যা ডায়াবেটিস নির্ণয় বা পর্যবেক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

লিপিড প্রোফাইল

একটি লিপিড প্রোফাইল মোট কোলেস্টেরল, এলডিএল (খারাপ কোলেস্টেরল), এইচডিএল (ভাল কোলেস্টেরল) এবং ট্রাইগ্লিসারাইড পরীক্ষা করে। এসব পরীক্ষায় হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে কীনা তা জানা যায়।

লিভার ফাংশন টেস্ট (এলএফটি)

এই পরীক্ষায় এসজিপিটি, এসজিওটি বিলিরুবিন এবং প্রোটিনের মতো এনজাইম পরিমাপ করা হয়, যা লিভারের স্বাস্থ্যের অবস্থা জানায়। এটি ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস এবং অ্যালকোহল বা ওষুধের কারণে লিভারের ক্ষতির মতো অবস্থা সনাক্ত করতে সাহায্য করে।

কিডনি ফাংশন টেস্ট

ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পরীক্ষা করা কিডনির স্বাস্থ্য বুঝতে সাহায্য করে। প্রাথমিক সনাক্তকরণ গুরুত্বপূর্ণ কারণ কিডনির রোগগুলি প্রায়ই অনেক দেরীতে পড়ে।

থাইরয়েড প্রোফাইল ( টি থ্রি, টি ফোর, টি এসএইচ)

থাইরয়েড গ্রন্থি বিপাক, ওজন এবং শক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। থাইরয়েড পরীক্ষা হাইপোথাইরয়েডিজম বা হাইপারথাইরয়েডিজম সনাক্ত করতে সাহায্য করে। থাইরয়েডের সমস্যার কারণে ক্লান্তি, মেজাজের পরিবর্তন এবং ওজনের ওঠানামার হতে পারে।

ভিটামিন ডি পরীক্ষা

হাড়ের শক্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মেজাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য ভিটামিন ডি প্রয়োজন। এই অপরিহার্য ভিটামিনের ঘাটতি হলে ক্লান্তি হয়,হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে।  এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ঝুঁকিও বাড়ায়।

ভিটামিন বি১২ পরীক্ষা

ভিটামিন বি১২ স্নায়ুর স্বাস্থ্য, স্মৃতিশক্তি এবং লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে ক্লান্তি,মনোযোগের অভাব এবং এমনকি দীর্ঘমেয়াদী স্নায়বিক ক্ষতি হতে পারে।

ইলেক্ট্রোলাইট প্যানেল

এই পরীক্ষাটি শরীরে সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ক্লোরাইডের মাত্রা পরীক্ষা করে। ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা হাইড্রেশন, পেশির কার্যকারিতা, রক্তচাপ এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন (সিআরপি বা ইএসআর)

এই পরীক্ষাগুলি শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যা জানায়। প্রদাহ বেশি হলে শরীরে সংক্রমণ, অটোইমিউন ব্যাধি বা হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধির লক্ষণ হতে পারে। সূত্র: ইন্ডিয়া টিভি

এনএইচ/