মসজিদ উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাকারী সাবেক মার্কিন সেনা আজ ধর্মপ্রাণ মুসলিম!
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:৩৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মেরিন সেনা রিচার্ড ম্যাক ম্যাককিনি এক সময় ইসলাম ও মুসলমানদের চরম ঘৃণা করতেন। ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেন ঘটনার পর তার মনে ইসলাম বিদ্বেষ জন্ম নেয়। ঘৃণা এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, তিনি নিজ শহরের একটি মসজিদে বোমা হামলার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেই মসজিদেই যখন তিনি প্রাথমিক অনুসন্ধানের জন্য যান, তখন মুসলমানদের আচরণ ও ভালোবাসা তাকে বদলে দেয়। আজ সেই মানুষটিই একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম, এমনকি এখন সেই মসজিদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করে আসছেন।

সেনাবাহিনীর চাকরি শেষে ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের মান্সি শহরে ফিরে আসেন ম্যাককিনি। তখন তার মনে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা আরও গভীর হয়। তিনি ঠিক করেন, নিজের শহরের মান্সি ইসলামিক সেন্টার-এ একটি বোমা রেখে সেটিকে উড়িয়ে দেবেন।

তবে হামলার আগে পরিকল্পনা ও তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি মসজিদে যান "গোয়েন্দা সেজে"। তার ধারণা ছিল, মুসলমানরা তাকে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করবে, যা তার হামলার পরিকল্পনাকে নৈতিক বৈধতা দেবে।

কিন্তু ঘটনাটি ঘটে সম্পূর্ণ বিপরীতভাবে। মসজিদে গিয়ে তিনি পান উষ্ণ অভ্যর্থনা, ভালোবাসা এবং খোলামেলা আলাপের পরিবেশ। মুসলিম সদস্যরা তার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন, তাকে সাদর আমন্ত্রণ জানান এবং কোনোভাবেই তাকে অবজ্ঞার চোখে দেখেন না।

এরপর টানা আট সপ্তাহ ধরে তিনি ইসলাম সম্পর্কে জানতে থাকেন, কোরআন-এর অনুবাদ পড়েন এবং মুসলমানদের সঙ্গে সময় কাটান।

অবশেষে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নাম রাখেন মুহাম্মদ ম্যাককিনি। বর্তমানে তিনি মান্সি ইসলামিক সেন্টার-এর বোর্ড প্রেসিডেন্ট, অর্থাৎ মসজিদের প্রধান দায়িত্বে রয়েছেন।

তার জীবনের এই পরিবর্তন নিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি প্রামাণ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি ফিল্ম) — “স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট” (Stranger at the Gate) — যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং অস্কার মনোনয়নও পেয়েছে।

 এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন: “আমি যাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিলাম, তারাই আমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছে।”
“ইসলাম আমাকে শান্তি দিয়েছে, আর মুসলমানরা আমাকে নতুন জীবন।”

এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে একটি শক্তিশালী বার্তা দেয় ঘৃণার জবাব ঘৃণা নয়, বরং ভালোবাসা ও সহানুভূতিই পারে মন পরিবর্তন করতে। আর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়েছেন।

এনএইচ/