শরিয়াহ আতঙ্ক ও আমাদের করণীয়
প্রকাশ:
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১১:২৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
খতিব তাজুল ইসলাম ব্রিটেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। বিয়ে করেছেন ইংরেজ লেডি। নামের মুসলিম। তবে লন্ডন শহরের জন্য তিনি কাজের মেয়র। ফিলিস্তিনের ভালো সাপোর্টার। তাই জাতিসংঘের ভাষণে ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বলেছেন যে, সে একটা অযোগ্য ও শরিয়া বাস্তবায়নকারী এক মেয়র। এভাবে তিনি আরও অনেক বিষয়ে কটাক্ষ করেছেন অনেককে। ট্রাম্প হলেন ইভানজেলিকান খ্রিষ্টান। তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে খুব খারাপ মনোভাব রাখে। আমেরিকার সকল অস্ত্র কারখানা তাদের দখলে। তারা চায় মুসলিমমুক্ত আমেরিকা ও ইউরোপ। ফিলিস্তিনের নাম নিশানা মুছে দিতে তারা বদ্ধপরিকর। ভবিষ্যতের ক্রুসেড যুদ্ধের জন্য তাদের প্রস্তুতি ফাইনাল। মুসলিম বিশ্বের কোথাও স্থিতিশীলতা তারা চায় না। হয় তাদের বশ্যতা স্বীকার করে নিতে হবে নতুবা আপনাকে ধ্বংস করে দেবে। মুসলিমদের সমাজ শরিয়া মোতাবেক পরিচালিত হলে তারা উপকৃত হবে উন্নত হবে এটা তারা জানে। এমনকি তাদের সাম্রাজ্যের ইতি ঘটবে এটাও জানে। সেজন্য তারা চারিদিকে শরিয়াহ আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের ভাষায়- শরিয়াহ মানেই জুলুম, বর্বরতা, পশ্চাৎপদতা। নারীদের যৌনদাসি বানানো। শরিয়াকে তারা ভয়াবহ এক আতঙ্কে রূপান্তরিত করেছে। শরিয়া আসলে কী? ইসলামি সমাজব্যবস্থার অপর নাম শরিয়াহ সমাজ। সাধারণ ভাষায় যদি বলি তাহলে কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে বৈষম্যহীন সাবলীল সমাজব্যবস্থার নাম শরিয়াহ মোতাবেক সমাজ। শরিয়া হলো আইনের শাসন। রুল অফ ল। আইনের চোখে সকলে সমান। অপরাধ করলে স্বয়ং খলিফাও দণ্ডিত হবেন। দুর্নীতি করার কোনো সুযোগ নেই। নারী নির্যাতন ধর্ষণের কোনো চান্সই নেই। শরিয়াহ কার্যকর হলে সুদি ব্যবসা থাকবে না। অবৈধ গুদামজাত চলবে না। সিন্ডিকেট চলবে না। জনগণের অর্থে শাসকদের বিলাসিতা চলবে না। মানে কোনো কাজে কোনো কর্মে চলবে না বিন্দুমাত্র ঘাপলা। যেসব আইন নিয়ে তাদের আপত্তি চুরির হাতকাটা, জিনা বা ব্যভিচারের বিচার এবং কিসাস। নারীদের হিজাবের ভেতরে রাখা। অবৈধ পন্থায় যৌনমিলনে নিষেধাজ্ঞা। মোটকথা, ইসলামি জীবন আচারে তাদের আপত্তি থাকলেও মোটা দাগের অভিযোগ আসে উপরোল্লিখিত বিষয়গুলোর ওপর। আমার অনুমান হিসাবে শরিয়াহ আইনের মাত্র ২-৩ ভাগের ওপর তাদের অভিযোগ ও আতঙ্ক। বাকি ৯৭-৯৮% ভাগ তো দুনিয়ার সকল মানুষ চায়। কিন্তু তারা কৌশলে গোটা শরিয়াহকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালায়, যা কাম্য না। কুফর কর্তৃক গোটা জনপদকে ধ্বংস করানোর চেয়ে ভালো হয় যতটুকু সম্ভব সেটার বাস্তবায়ন। ৪/৫টি আইন ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হলো। এক লাফে উপরে ওঠার দরকার নেই। আসলে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ফরমান- যে তারা ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের ওপর খুশি হবে না যতক্ষণ না তারা তোমাদেরকে তাদের মিল্লাতের ওপর কায়েম করতে পারবে। তাদের রাজি খুশির বিষয় না। বিষয়টা হলো আমাদের জনপদের হেফাজত। এইতো দেখেন আফগানিস্তানের উন্নতি হচ্ছে তাদের গায়ে আগুন জ্বলছে। তারা চিন্তাই করতে পারছে না যে, সততা, ন্যায়পরায়ণতা একটা জাতিকে জিরো থেকে হিরো কীভাবে বানিয়ে ফেলছে। বাংলাদেশে শরিয়াহ কার্যকর শরিয়াহ কায়েম করার জন্য যারা আকুতি করছেন তারা বুঝতে পারছেন না যে, কত কঠিন আগুনে তারা ঝাঁপ দিচ্ছেন। পুলিশ মেলেটারি জনপ্রশাসন পাবলিক কেউই আপনার পক্ষে না। তাহলে ফাঁকা বুলিটা দিয়ে বিপদ কেনো ডেকে আনছেন ভাই। আমার হেকমত হলো, নামাজ রোজা হজ জাকাত এসব ইবাদতই ইসলাম। এখানে ইসলামি নামাজ বলে কিছু নেই। তেমনি মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ হলো, তোমরা আদল ইনসাফ ও ইহসান কায়েম করো। তাই বৈষম্যহীন আদল ও ইনসাফের সমাজ কায়েমে আমরা হই ঐক্যবদ্ধ। এটাতেই কাজ হবে ইনশাআল্লাহ। কথাগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বললাম। লেখক: আলোচক, চিন্তক ও সংগঠক আরএইচ/ |