জুলাই আন্দোলনে কোনো ষড়যন্ত্র ছিল না: আলী আহসান জুনায়েদ
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৬:৫২ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

ধারাবাহিক যেসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে, সেসব কর্মসূচি ছিল আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতের মেটিকিউলাস ডিজাইনের (নীলনকশা বা সূক্ষ্ম নকশা) অংশ। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৮তম সাক্ষীর জেরায় এ দাবি করেন আসামি পক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। তার এ দাবি ‘সত্য নয়’ বলে জবাব দেন ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে গত রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ মামলায় সাক্ষ্য দেন জুনায়েদ।

পরে চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মো. মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তার জেরা শুরু হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সোমবারও তাকে জেরা করা হয়।

জেরায় সাক্ষী জুনায়েদকে ষড়যন্ত্রকারী উল্লেখ করে আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে যারা ষড়যন্ত্রকারী, তাদের মধ্যে আপনি একজন।’ এর জবাবে সাক্ষী জুনায়েদ বলেন, ‘এই অভিযোগ সত্য নয়। আন্দোলনে কোনো ষড়যন্ত্র ছিল না।’

আইনজীবী আরো প্রশ্ন করে বলেন, “ফেসবুক প্রফাইল লাল করা, ‘মার্চ ফর জাস্টিস’, ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’, ১ আগস্টকে ৩২ জুলাই হিসেবে গণনা করার সিদ্ধান্ত এবং ‘মার্চ টু ঢাকা’সহ সব কর্মসূচি ছিল দীর্ঘদিনের লালিত নীলনকশার ফলশ্রুতি ও অবৈধ।” জুনায়েদ রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর এই দাবিকেও ‘অসত্য’ বলে জবাব দেন।

‘জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নির্দেশে কোনো গণহত্যা হয়নি এবং আন্দোলনকারীরা ষড়যন্ত্র করে, টার্গেট করে করে জুলাই শহীদদের হত্যা করেছেন।’ -আইনজীবী আমির হোসেন এ দাবিও সত্য নয় বলে জবাব দেন সাক্ষী জুনায়েদ।

জেরায় এই আইনজীবী বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বা রাজাকারের নাতিপুতি বলেননি। জবাবে সাক্ষী আলী আহসান জুনায়েদ জানান, ‘এ কথা সত্য নয়।’ পরে আমির হোসেন বলেন, ‘তুমি কে, আমি কে? রাজাকার রাজাকার/কে বলেছে, কে বলেছে? স্বৈরাচার স্বৈরাচার’ স্লোগানের সঠিক অর্থ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়ে আন্দোলনকারীরা এই স্লোগান দিয়ে নিজেরাই নিজেদের ছোট করেছেন। আইনজীবীর এ দাবি অস্বীকার করে সাক্ষী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ব্যঙ্গমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা এই স্লোগান দিয়েছেন।’

জুনায়েদকে জেরা শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল (মঙ্গলবার) পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন।

শেখ হাসিনা ছাড়া এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। শেখ হাসিনা ও কামালকে পলাতক দেখিয়ে চলছ মামলার বিচারকাজ। চৌধুরী মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে মামলায় রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হয়েছেন। গত ২ সেপ্টেম্বর তিনি শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এমএইচ/