মেঘ-ভাঙা বৃষ্টি কেন হয়
প্রকাশ:
২৬ আগস্ট, ২০২৫, ১২:১০ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
মুহাম্মদ মিজানুর রহমান সম্প্রতি পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মেঘ-ভাঙা বৃষ্টি বা Cloudburst-এর ঘটনা বেড়ে গেছে। এর ফলে ব্যাপক প্রাণহানি, ধ্বংস ও পাহাড়ি অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দিচ্ছে। অনেকেরই প্রশ্ন—এ ধরনের বৃষ্টি কেন হয়? এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী? মেঘ-ভাঙা বৃষ্টি কী? মেঘ-ভাঙা বৃষ্টি বলতে বোঝায়—খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অস্বাভাবিক পরিমাণে বৃষ্টিপাত হওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন এক ঘণ্টায় ১০০ মিমি বা তার বেশি বৃষ্টি হয়, সেটিকে মেঘ-ভাঙা বৃষ্টি হিসেবে ধরা হয়। কেন হয় মেঘ-ভাঙা বৃষ্টি? ১. অত্যধিক জলীয় বাষ্প জমা হওয়া: উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার কারণে বায়ুমণ্ডলে প্রচুর জলীয় বাষ্প জমে। এই বাষ্প এক জায়গায় ঘনীভূত হয়ে ভারী মেঘ তৈরি করে। ২. সক্রিয় নিম্নচাপ বা বায়ুচাপের সংঘর্ষ: যখন দুটি ভিন্ন গরম-ঠান্ডা বাতাসের স্তর মুখোমুখি হয়, তখন তাৎক্ষণিক ঘনঘটা তৈরি হয় এবং হঠাৎ প্রবল বৃষ্টি নামে। ৩. ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি: বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে মাটির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জলীয় বাষ্প দ্রুত উপরে উঠে, যার ফলে ভারী মেঘ তৈরি হয় এবং তা দ্রুত বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। ৪. পাহাড়ি অঞ্চলে মেঘ আটকে যাওয়া: পাহাড়ি এলাকায় মেঘ আটকে গিয়ে এক জায়গায় ঘনীভূত হয়। মাটি ভিজে থাকায় পানি নিচে যেতে পারে না, ফলে বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ে। আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব বর্তমান সময়ে মেঘ-ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তন। বিশ্ব উষ্ণতা বাড়ার ফলে বৃষ্টির ধরন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে—কখনও দীর্ঘ খরা, কখনও অতি বৃষ্টি। মেঘ-ভাঙা বৃষ্টি একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক ঘটনা, যার পূর্বাভাস অনেক সময়ই দেওয়া কঠিন। তবে জলবায়ু সচেতনতা, বিজ্ঞানভিত্তিক পূর্বাভাস ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে এই প্রভাব অনেকটাই কমানো সম্ভব। এমন বৃষ্টিকে নিছক দুর্যোগ না ভেবে এটিকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা উচিত। আরএইচ/ |