ফোরামের আয়োজনটি হৃদয়ের গভীরে অনন্ত প্রেরণা হয়ে থাকবে
প্রকাশ:
২৩ আগস্ট, ২০২৫, ১১:০৩ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
মুহিউদ্দীন মাআয মনোরম পরিবেশ ও লিখিয়ে হৃদয়ের মেলবন্ধনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরামের যুগপূর্তি উৎসবের বর্ণাঢ্য আয়োজন। শুক্রবার (২২ আগস্ট) দিনভর প্রাণের উচ্ছ্বাস, সুস্থ-সংস্কৃতি চর্চার আহ্বান আর জ্ঞানের মশাল হাতে এগিয়ে চলার অঙ্গীকারে মুখরিত ছিল অনুষ্ঠানটি। সম্মানিত অতিথিদের প্রেরণাদায়ক বাণী, বিজ্ঞজনদের স্নেহমাখা পরামর্শ, অংশগ্রহণকারীদের শৃঙ্খলা ও উষ্ণ সৌহার্দ্য— এসব কিছু আজকের এই আয়োজনকে করেছে স্মরণীয়, মহিমান্বিত ও অনন্য। যুগপূর্তি উৎসব ও লেখক সম্মিলনকে ঘিরে দেয়ালিকা ও ম্যাগাজিন প্রদর্শনী, লেখক ও সদস্যদের অনুভূতি, জুলাই বিপ্লবের কবিতা, পুরস্কার বিতরণীসহ নানামুখী কর্মসূচি পালিত হয়েছে দিনভর। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যুগপূর্তির এই ‘লেখক ফোরাম সাহিত্য পদক ২০২৫’ প্রদান করে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষ্য হয়েছে বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম। প্রথমবারের এই পদকে ভূষিত হয়েছেন ৩ জন খ্যাতিমান সৃজনশীল লেখক, গবেষক, ও আলেম । তাঁরা হলেন মাদরাসা দারুর রাশাদ, ঢাকা-এর মুহতামিম, দেশের ইসলামি শিক্ষাধারার নতুন দিগন্ত উন্মোচনকারী, আকাবিরের জীবন ও কর্মের ওপর স্মারক গ্রন্থনার ধারাপ্রবর্তক ও দেশে চিন্তক, গবেষক আলেম তৈরির প্রাতিষ্ঠানিক ধারা চালুর প্রথম উদ্যোগ গ্রহণকারী মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান। বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী লেখক, ৩০ খণ্ডে ‘আল বুদুরুল মুজিয়্যাহ ফি তারাজিমিল হানাফিয়্যাহ’-এর রচয়িতা জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়ার প্রধান মুফতি, মুফতি হিফজুর রহমান। নন্দিত ও সৃজনশীল আলেম লেখক, সিরাত গবেষক মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন। লেখক ফোরাম সাহিত্য পদকপ্রাপ্ত মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন বলেন, আমি বাংলাদেশ লেখক ফোরামের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, তারা আমাকে যোগ্যতায় নয় হয়তো ভালোবাসায় আমাকে পদকের জন্য নির্বাচন করেছে। লেখক জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতিচারণ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, এই আনন্দঘন মুহূর্তে প্রথমে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি আমার বাবা-মাকে, যাঁরা আমাকে মেহেরবানি করে মাদরাসায় পড়িয়েছেন। এবং আমার প্রিয়তম শিক্ষক শায়খুল হাদিস মাওলানা বশির আহমদকে যিনি আমাকে কৈশোরে কলম ধরতে শিখিয়েছেন ও আমাকে লাজনাতুত তালাবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। মুহতারাম লেখক প্রথিতযশা লেখকদের স্মরণ করে বলেন, লিখতে এসে আমি আরও যাদের সান্নিধ্য পেয়েছি, অধ্যাপক আখতার ফারুক, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান ও আমার সকল শিক্ষককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। বিশেষকরে যাঁর সান্নিধ্যে আমি সাহিত্য বুঝেছি, দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষক মাওলানা নুর আলম খলিল আমিনিকে। আজকের এই সমাবেশ নিছক কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এটি সাহিত্য-সারথীদের সম্মিলিত চেতনার প্রতিধ্বনি, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন এবং আগামী দিনের পথচলার অনুপ্রেরণা। এই মঞ্চে উচ্চারিত প্রতিটি বাণী, প্রতিটি সুর, প্রতিটি সৃজনশীলতার পরশ আগামীতে সমাজে বুকে ছড়িয়ে দেবে আলোকবর্তিকা, গেঁথে দেবে কল্যাণ ও শান্তির বাণী। যদিও কালের আবর্তন একদিন এই দিনটিকে পেছনে ফেলে যাবে; ঋতুর পালাবদল, দিনের স্রোত, জীবনের ব্যস্ততা হয়তো মুছে দেবে অনেক স্মৃতি। কিন্তু আজকের এই আয়োজন—তার আনন্দ, তার শিক্ষা, তার সৌন্দর্য—চিরকাল হৃদয়ের গভীরে অনন্ত প্রেরণা হয়ে বেঁচে থাকবে। এ যেন এক বীজ রোপন হলো, যার ফল আমরা পাব আগামী দিনের শুভ ভোরে, আগামী প্রজন্মের সোনালি স্বপ্নে। লেখক: শিক্ষার্থী ও তরুণ লেখক আরএইচ/ |