জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস দেশের জন্য অশনি সংকেত: জমিয়ত নেতৃবৃন্দ
প্রকাশ:
২১ আগস্ট, ২০২৫, ০৬:৫৭ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের আঞ্চলিক অফিস স্থাপন একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। যা দেশের ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক রীতিনীতি ও সংবিধানবিরোধী কর্মকাণ্ডের পথ সুগম করবে। এটি কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না, বরং এলজিবিটিকিউ এক্টিভিজম ও ধর্মবিরোধী অপচেষ্টার বৈধতা দিতে ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলা ও মহানগরের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিলে জমিয়ত নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। কুমিল্লা পদুয়া বাজারস্থ হোটেল নুরজাহানের হলরুমে আয়োজিত এই কাউন্সিলে জেলা সভাপতি মুফতি আমজাদ হোসাইন সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। তিনি বলেন, যে সরকার মাত্র তিন মাসের সীমিত মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছে, সে সরকার কিভাবে ৩ বছরের জন্য মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের অনুমতি দেয়! মাওলানা আফেন্দী আরও বলেন, এই সরকারের এই এখতিয়ার নেই। তাদের নিরপেক্ষতা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা স্পষ্টই প্রত্যক্ষ করছি—অন্তবর্তীকালীন সরকার বিপ্লবীদের পক্ষে না দাঁড়িয়ে বরং একটি নির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের দিকেই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এটি নিঃসন্দেহে শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। আমাদের শহীদরা মানবাধিকার কমিশনের দপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে রক্ত দেয়নি। তিনি আরও বলেন, যারা মৌলবাদকে ইসলামের সাথে তুলনা করেন এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে দূরদর্শিতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আমরা এ ধরনের বক্তব্যের নিন্দা জানাই। একইভাবে, যারা ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিক সকল প্রকার জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় আমরা তাদের এই বক্তব্যও প্রত্যাখ্যান করি। ধর্ম কখনোই জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না; বরং ধর্ম শান্তি, ন্যায় ও মানবিকতার শিক্ষা দেয়। যারা ধর্মকে জঙ্গিবাদের সাথে তুলনা করে, তাদের ইসলাম ও ধর্মীয় জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমাদের সন্দেহ জাগে। আমরা এ ধরনের বক্তব্যেরও নিন্দা জানাই। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লোকমান মাযহারী, প্রচার সম্পাদক মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী, সমাজসেবা সম্পাদক মাওলানা শামসুল আরেফীন খান সাদী, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মুফতী জাবের কাসেমী, মাওলানা শাহজালাল ভূঁইয়া, মুফতি শামসুল ইসলাম জিলানী, ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী প্রমুখ। কাউন্সিলে জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন, ড. মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহতাব উৎস-এর মতো বিশিষ্ট লেখক ও চিন্তাবিদদের বিরুদ্ধে সমকামী এক্টিভিস্ট সাফওয়ান চৌধুরী রেবিল-এর প্রকাশ্য হত্যার হুমকি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়। এ ঘটনায় অবিলম্বে তার গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। নেতৃবৃন্দ বলেন, এলজিবিটিকিউ এর নামে সমাজে যে অপসংস্কৃতি ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, তা রোধে সরকারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। ইসলামি মূল্যবোধ ও পারিবারিক কাঠামো রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সব সময় দেশের কল্যাণে, ধর্মীয় ঐক্যে এবং ইসলামপন্থী শক্তিগুলোর সহাবস্থানে বিশ্বাসী। কোনো বিভ্রান্তি তৈরি করে বা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে জমিয়তের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। আমরা জনগণ, সরকার ও ধর্মপ্রাণ আলেম-ওলামার প্রতি আহ্বান জানাই। এ ধরনের আন্তর্জাতিক চাপ ও অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন। কাউন্সিল অধিবেশনে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কুমিল্লা পূর্বের সভাপতি মাওলানা অলিউল্লাহ, খেলাফত মজলিস কুমিল্লা মহানগরের সিনিয়র সহ সভাপতি মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সদস্য সদর দক্ষিণের সংসদ সদস্য প্রার্থী মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফী, এনপিপির যুগ্নসমন্বয়ক ইন্জি. রাশেদ হাসান, চান্দিনা থানা সভাপতি ও কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মুফতী ওয়ালীউল্লাহ, কুমিল্লা সদর জমিয়তের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাও মুতাহের , মুরাদনগর থানার সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাও আবু হানীফ সহ জেলা ও মহানগর জমিয়ত, যুব ও ছাত্র জমিয়তের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলবৃন্দ। উল্লেখ্য, কাউন্সিলে জেলা কমিটি মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফীকে সভাপতি ও মাওলানা শাহজালাল ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। মহানগর কমিটিতে মাওলানা মোতাহার হোসাইনকে সভাপতি ও মাওলানা ইয়াকুব আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এমএইচ/ |