পিআর পদ্ধতিতে গঠিত হয় যোগ্য ও মানসম্পন্ন সংসদ: মিয়া গোলাম পরওয়ার
প্রকাশ:
১৬ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:৩৮ রাত
নিউজ ডেস্ক |
![]()
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, পৃথিবীর ৯১টি দেশে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এই পদ্ধতির ছয়টি ভিন্ন ধরণ আছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। পিআর ব্যবস্থার মূল ধারণা হলো—এখানে ব্যক্তি নয়, দলই নির্বাচনের প্রার্থী। জনগণ দলের আদর্শ, চরিত্র ও দেশ গঠনের রূপরেখা বিবেচনায় ভোট প্রদান করে। শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে নড়াইল জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার উদ্যোগে “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতাকর্মীদের করণীয়” শীর্ষক লিডারশিপ ট্রেনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অধ্যাপক পরওয়ার বলেন, পিআর ব্যবস্থার কয়েকটি বড় সুবিধা আছে। এতে কালো টাকা, পেশীশক্তি ও মনোনয়ন বাণিজ্যের অবসান ঘটে। কারণ ভোট দেওয়া হয় ব্যক্তিকে নয়, বরং দলের পক্ষে। কোনো দল মোট ভোটের এক শতাংশ পেলেও সংসদে সেই অনুপাতে আসন পায়। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, “যদি কোনো দল ৩০ শতাংশ ভোট পায় তবে তারা সংসদে ৯০টি আসন পাবে।” নির্বাচনের আগে প্রতিটি দল তিনশ প্রার্থীর তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দেবে। এরপর যে দল যত আসন পাবে, তালিকার প্রথম থেকে সেই অনুপাতে সদস্য সংসদে প্রবেশ করবেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় যে প্রার্থী পরাজিত হন, তার ভোট ‘পচে যায়’—কিন্তু পিআর পদ্ধতিতে প্রতিটি ভোটের মূল্যায়ন হয়। ক্ষুদ্র দলগুলোরও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। সবচেয়ে বড় লাভ হলো—এতে একটি “মানসম্পন্ন ও যোগ্য সংসদ” গড়ে ওঠে। দলগুলো তালিকার শুরুর দিকে শিক্ষিত, যোগ্য ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে, ফলে জাতীয় সংসদ দক্ষ নেতৃত্ব পায়। বিএনপির পিআর বিরোধী অবস্থান প্রসঙ্গে জামায়াতের এই নেতা বলেন, “বিএনপি অনড় থাকতে পারে, আমরাও অনড়। আমাদের দাবি হচ্ছে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে।” তিনি ইভিএম ও পিআরের তুলনা প্রসঙ্গে সমালোচনা করে বলেন, “ইভিএম কেবল একটি ভোটদানের যন্ত্র, আর পিআর হলো নির্বাচন পদ্ধতি। দুটিকে এক কাতারে ফেলা ভুল।” অধ্যাপক পরওয়ার মনে করিয়ে দেন, একসময় কেয়ারটেকার সরকারের দাবিও অস্বীকার করা হয়েছিল। কিন্তু জনগণের আন্দোলনে তা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল সরকার। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, একইভাবে জাতি একদিন পিআর পদ্ধতিও গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানে জেলা আমির আতাউর রহমান বাচ্চুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মোবারক হোসাইন এবং অঞ্চল টিম সদস্য মাওলানা আশেক এলাহী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির জাকির হোসেন বিশ্বাস, সহকারী সেক্রেটারি আইয়ুব হোসেন খান, আবদুস সামাদ, আবুল বাশার, মাওলানা আলমগীর হোসাইন, হেমায়েতুল হক হিমু, জামিরুল হক টুটুল, খিয়াম উদ্দিন, ড. আব্দুস সোবহান প্রমুখ। এমএইচ/ |