হজরত উমর রা. সম্পর্কে শফিকুল ইসলাম মাসুদের ‘জঘন্য মিথ্যাচার’
প্রকাশ:
১৬ আগস্ট, ২০২৫, ১০:৫৮ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
|| আরজু আহমদ || ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি। তিনি সেই জঘন্যতা প্রমাণ করতে গিয়ে উমর রা.কে প্রকারান্তরে স্বভাবজাত ডাকাত ও ধর্ষক প্রতীয়মান করছেন। যেন তার কাছ থেকে কোনও নারীর রেহাই ছিল না। সে বলছে- তাই এক নারী যখন তাকে দেখলো সে থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছে। নিজের ইজ্জত বাঁচাতে গহনাদি দিয়ে নিস্তার পেতে চাইছে। এই বানানো কিচ্ছাকে এই জামাত নেতা উমর রা. এঁর ইসলাম গ্রহণের 'কিছুক্ষণ পরের' ঘটনা হিসেবে অভহিত করছে। অথচ ইসলাম গ্রহণের পর উমর রা. সাহাবিদের নিয়ে প্রথম প্রকাশ্যে কা'বার দিকে রওনা দেন। রাসুল সা.কে সামনে রেখে দুই ভাগে সাহাবাগণ বিভক্ত ছিলেন। এক ভাগের সম্মুখে ছিলেন উমর রা. অপরভাগে হামযা রা.। প্রকাশ্যে ইসলামের ঘোষণা ও কা'বা প্রান্তরে সত্যের এই উন্মোচনের জন্য উমর রা.কে রাসুল সা. আল ফারুক হিসেবে উপাধি দেন। উমর রা. ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ইসলামের প্রতি শত্রু ভাবাপন্ন ছিলেন এটা সত্যি। কিন্তু তিনি ছিলেন আরবদের মধ্যে সম্মানিত। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। এই বয়সেই তিনি কুরাইশদের দূত ছিলেন। গোত্রে গোত্রে বিরোধের মীমাংসায় বিচারক ছিলেন। আরবদের মধ্যে এই সম্মান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, কারণ তিনি ছিলেন অন্যদের থেকে আলাদা। আরবদের যে সামাজিক অবক্ষয় ছিল তা থেকে তিনি দূরে থাকতেন। ইতিহাসের হিলয়াহ আল আওলিয়া, সিফাত আস সাফওয়াহ গ্রন্থগুলোতে এসব উল্লেখ আছে। প্রি ইসলামিক যুগে উমর এক কৃতদাসীকে প্রবল প্রহার করেছিলেন ইসলাম গ্রহণের জন্য। এই দৃশ্য দেখে আবু বাক্বার তাঁর থেকে সেই দাসীকে কিনে মুক্ত করেন। উমর রা. রিজনেবল ছিলেন। তিনি তাঁকে হত্যা করার বদলে অর্থের বিনিময়ে মুক্ত করতে সম্মত হন। তিনি রাজনৈতিক কারণে ইসলাম গ্রহণের আগে রাসুলকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। ইসলাম গ্রহণের আগে তাঁর এইরকম কয়েকটা ঘটনা জানা যায়। এই পর্যন্ত। কিন্তু তাঁকে তাঁর স্বীয় বহু উত্তম স্বভাবের কারণেই আল্লাহ বেছে নিয়েছিল। অথচ তাঁর নামে আজ এই মিথ্যাচার করা হলো! আল্লাহর রাসুল সা. বলেছেন, 'যে উমরকে অসম্মান করে সে আমাকে অসম্মান করে।…উমর সেই ব্যক্তি যাঁর জিহ্বায় ফেরেশতা কথা বলে।' (আল তাবারানি ফি আল আওসাত) কেবল উমরকে অসম্মানিতই করা হয়নি। বরং এই বক্তা ইসলামের নামে উমরের ওপর মিথ্যাচার আরোপ করেছেন। বলেছেন, উমর রা. মুসলিম হওয়ার পরও তাঁর 'শয়তানি প্রবৃত্তি রয়ে গেছে।' অথচ আল্লাহর রাসুল সা. বলছেন, 'উমর যে পথে যায়, সে পথে শয়তান যায় না।' এই হাদীস বুখারী ও মুসলিম উভয় গ্রন্থে আছে। সাহাবাগণ বলেন, 'উমর রা. যখন কোনও অভিমত ব্যক্ত করতেন, দেখা যেত সে অভিমতকে নিশ্চিত করে ওহী নাজিল হত।' ইবনে আসাকির। অবশ্যই, অবশ্যই এবং অবশ্যই এটা বানানো হিস্ট্রি। এটা উমর রা. এঁর ওপর তোহমত। তিনি ব্যভিচারের সাথেও কখনও ছিলেন না। আল্লাহর রাসুল সা. বলেছেন, আসমানে কোনও ফেরেশতা নেই যে উমরকে সম্মান প্রদর্শন করে না। আর জমিনে কোনও শয়তান নেই যে উমরকে দেখে পলায়ন করে না। (ইবনে আসাকির) ফেরেশতারা উমরের প্রশংসা করে। শয়তান উমরকে দেখে পলায়ন করে। তাহলে উমরের প্রতি এই জঘন্য মিথ্যাচার কে করতে পারে? লেখক: কেন্দ্রীয় সদস্য, এনসিপি এসএকে/ |