দীর্ঘ বৈঠকের পর ইউক্রেন ইস্যুতে ট্রাম্প–পুতিনের বক্তব্য
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট, ২০২৫, ০৮:৫৮ সকাল
নিউজ ডেস্ক

আমেরিকার আলাস্কায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে মুখোমুখি হলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হলেও কোনো সমাধান আসেনি। দুই প্রভাবশালী নেতার অবস্থান আগের মতোই রয়ে গেছে।

শুক্রবার আলাস্কার অ্যাঙ্করেজের জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ–রিচার্ডসনে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে ট্রাম্প অস্পষ্টভাবে ইতিবাচক মন্তব্য করে বলেন, “আমরা অনেক বিষয়েই ঐকমত্যে পৌঁছেছি, তবে সামান্য কিছু বিষয় এখনো বাকি আছে।” তবে তিনি বিস্তারিত জানাননি, এমনকি সেগুলো ইউক্রেন সম্পর্কিত কিনা তাও স্পষ্ট করেননি। শুধু এটুকুই বলেন, আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি।

অন্যদিকে পুতিন তাঁর বক্তব্যে ইউক্রেন নিয়ে কঠোর অবস্থান বজায় রাখেন। তিনি বলেন, “এটি আমাদের নিরাপত্তার মৌলিক হুমকির সঙ্গে জড়িত। স্থায়ী সমাধানের জন্য সংঘাতের মূল কারণগুলো দূর করতে হবে।” রাশিয়ার দাবি—ইউক্রেনকে তাদের একটি বড় অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দিতে হবে, সেনাবাহিনী ভেঙে দিতে হবে, ন্যাটোতে যোগদানের অঙ্গীকার থেকে সরে আসতে হবে এবং বর্তমান জেলেনস্কি সরকারকে পরিবর্তন করতে হবে।

পুতিন ইঙ্গিত দেন যে, ট্রাম্পের সঙ্গে কিছু বিষয়ে তাদের চুক্তি হয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কিয়েভ ও ইউরোপীয় রাজধানীগুলো বিষয়টিকে গঠনমূলকভাবে নেবে।

ট্রাম্প জানান, তিনি শিগগিরই ন্যাটো নেতৃবৃন্দ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং অন্যদের সঙ্গে ফোনে আলোচনার ফলাফল জানাবেন। সাংবাদিকদের প্রশ্ন না নিয়েই বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “সম্ভবত খুব শিগগিরই আবার দেখা হবে।” জবাবে পুতিন ইংরেজিতে বলেন, “পরের বার মস্কোতে।” ট্রাম্প হেসে উত্তর দেন, “ওহ, এটি বেশ আকর্ষণীয়। এ নিয়ে আমাকে কিছুটা চাপের মুখে পড়তে হতে পারে, তবে মনে হচ্ছে ঘটনাটি ঘটতে পারে।”

এই সম্মেলনে পুতিনকে দেওয়া হয় উষ্ণ অভ্যর্থনা। পশ্চিমা বিশ্ব যেখানে তাকে এড়িয়ে চলছে এবং ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে, সেখানেও ট্রাম্প তাঁকে লাল গালিচায় অভ্যর্থনা জানান। সাধারণত সম্মানিত রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্যই এমন আয়োজন করা হয়।

দুই নেতা হাসিমুখে করমর্দন করেন, লাল গালিচায় পাশাপাশি হাঁটেন এবং এক গাড়িতে ওঠেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো, তারা কোনো দোভাষী ছাড়াই পাশাপাশি বসে কথা বলেন। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের নেতার একই গাড়িতে যাত্রা—এটি ছিল এক বিরল দৃশ্য।

সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস

এসএকে/