মুসলমানদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের বড় অপবাদের নাম জঙ্গিবাদ
প্রকাশ:
২৫ জুলাই, ২০২৫, ১১:৪৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
কারো ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পেলে সেটা যাচাই-বাছাই ছাড়া গ্রহণ ও প্রচার করা ইসলামে নিষিদ্ধ, কঠিন হারাম। মহান আল্লাহ ইসলাম নামের যে শাশ্বত জীবনবিধান আমাদের দিয়েছেন, সেখানে ধারণাবশত কারো ওপর আক্রমণ করা দূরে থাক, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ ছাড়া কারো ব্যাপারে মন্দ ধারণা করাও নিষেধ। মহান আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অধিকাংশ ধারণা থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয়ই কিছু ধারণা গুনাহ (হুজুরাত ১২)। আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন, যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, তোমরা সে বিষয়ের অনুসরণ কোরো না (সুরা বনি ইসরাইল ৩৬)। সন্দেহবশত কারো ব্যাপারে অহেতুক ধারণা করাই যদি অপরাধ হয়, তবে বুঝেশুনে, সজ্ঞানে নির্দোষ ব্যক্তিকে জঙ্গি হিসেবে ফাঁসিয়ে দেওয়া কত বড় জঘন্য অপরাধ, তা সহজেই অনুমেয়। আপনি যদি ইউরোপ-আমেরিকায় ভ্রমণ করে থাকেন, আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতা থাকার কথা। শুধু মুসলমান নাম থাকার কারণেই সেসব দেশ ভ্রমণে আপনাকে নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়। এটা তাদের ইসলামোফোবিয়ার ফল। একটা সময় আমাদের দেশের মাটিকেও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এ দেশের ধার্মিক শ্রেণিকে নানা সময়ে জঙ্গি তকমা দেওয়া হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করে সামনে ফাজায়েলে আমল, হেকায়েতে সাহাবা, কোরআনের অনুবাদ রেখে ছবি তুলে বলা হয়েছে এরা জঙ্গি। এদের কাছে জিহাদি বই পাওয়া গেছে। তাদের দাবি অনুযায়ী কোরআন যদি জঙ্গিবাদের বই হয়, তবে আমরা সবাই জঙ্গি। কারণ আমাদের প্রত্যেকের বাসায় কোরআন আছে। আমরা সবাই কোরআন পড়ি। এদের খুঁটিতে এতটাই জোর যে ন্যূনতম সাবধানতার তোয়াক্কাও এদের করতে হয়নি। হাতের কাছে যা পেয়েছে তাকেই এরা জঙ্গিবাদের বই হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে। এগুলো যে নাটক ছিল, বর্তমানে পুলিশের অনেক দায়িত্বশীল বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় জঙ্গি দমনের নামে এ দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টা বিভাগ পরিচালিত হয়। এদের প্রধান কাজই হচ্ছে তথাকথিত জঙ্গি ধরা। একদিকে দায়িত্বশীলরা বলছেন, এ দেশে কোনো জঙ্গি নেই, অপরদিকে জঙ্গি দমনের নামে এতগুলো টিম! এ দেশে খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতির মতো বড় বড় অপরাধ প্রতিনিয়ত সংঘটিত হয়, যা দমনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্পেশাল কোনো ফোর্স নেই। আবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জনশক্তির অভাবে সাধারণ জনগণ পর্যাপ্ত সেবা পায় না। অথচ কথিত জঙ্গি ধরার নামে এতগুলো টিম কাজ করছে। মূলত পশ্চিমাদের খুশি করার জন্য তাদের লিখিত চিত্রনাট্য অনুযায়ী জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করাই এদের কাজ। এর পেছনে আছে এক গভীর ষড়যন্ত্র। এটা এ দেশের মানুষকে দ্বিনবিমুখ করার পাঁয়তারা। কারণ পশ্চিমারা জানে, এ দেশের মানুষ ধার্মিক, তারা আলেমদের ভালোবাসে, আলেমদের কথা শোনে; তাই জনগণের হৃদয় থেকে ইসলাম ও আলেমদের ভালোবাসা মুছে দেওয়ার জন্য তারা ইসলামপন্থীদের জঙ্গি বানানোর নাটক করে। এতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়। আলেমদের ব্যাপারে তাদের কুধারণা তৈরি হয়। একসময় তারা দ্বিন থেকে বিমুখ হয়ে পড়ে। বিগত সময়ে জঙ্গি নাটক বহুবার মঞ্চস্থ হয়েছে। কিন্তু এই সময়ে এসেও যে সেই পুরনো নাটক আবার আমাদের দেখতে হবে, তা আমরা কেউই হয়তো ভাবিনি। কয়েক দিন আগে কয়েকজন তরুণ আলেম-দাঈর বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে। কেন তাদের চরিত্রে জঙ্গিবাদের কালিমা লেপন করা হলো, এর কারণ আমরা সহজেই অনুমান করতে পারি। কারণ তারা এমন যুবক, যাদের দ্বিনি লেখালেখি, গবেষণা ও দাওয়াহ পশ্চিমাদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। ফলে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্যই মূলত এই নতুন জঙ্গি নাটকের অবতারণা। তথ্যসূত্র: কালের কন্ঠ এনএইচ/ |