"সন্তান হারানোর বেদনায় সবর, পুরস্কারে জান্নাতের দ্বার"
প্রকাশ:
২৪ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩৪ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ইসলামে ধৈর্য বা সবরকে অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কোনো মানুষ যদি তাঁর সন্তানকে হারান এবং সে অবস্থায় আল্লাহর ফায়সালায় সন্তুষ্ট থেকে সবর করেন, তাহলে তার জন্য রয়েছে অপার পুরস্কার ও জান্নাতের সুসংবাদ। হাদিসে সন্তানের মৃত্যু ও সবরের পুরস্কার নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন,“যে কোনো মুসলিম ব্যক্তি তার তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ করলে এবং সে ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাত দান করবেন।” (বুখারি, হাদিস: ১২৪১; মুসলিম, হাদিস: ২৬৩২) অন্য এক বর্ণনায় আছে, যদি দুই সন্তানও হয়, তবুও একই পুরস্কার প্রযোজ্য হবে। আরও এসেছে, নবী (সা.) বলেন:“আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করেন, তোমরা আমার বান্দার সন্তানের জান কবজ করেছ? তারা বলে, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তাহলে সে কী বলেছিল? ফেরেশতারা বলে, সে বলেছে, ‘আল্লাহরই আমরা এবং তাঁর কাছেই ফিরে যাব’ এবং তিনি ধৈর্য করেছেন। তখন আল্লাহ বলেন, তোমরা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করে দাও এবং সেটার নাম রাখো ‘বাইতুল হামদ’ (প্রশংসার ঘর)।” (তিরমিজি, হাদিস: ১০২১) ধৈর্যই মুক্তির পথ সন্তান হারানো একজন পিতা-মাতার জন্য অত্যন্ত কঠিন পরীক্ষা। কিন্তু এই কঠিন সময়ে সবর করা এবং আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখা—তাদের ইমানের সৌন্দর্য ও দৃঢ়তার প্রমাণ। কুরআনেও বলা হয়েছে: “নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদেরকে তাদের পুরস্কার পূর্ণমাত্রায় দেওয়া হবে কোনো হিসাব ছাড়াই। ‘ (সূরা আজ-জুমার: ১০) সেই শিশুরা জান্নাতি ইসলাম অনুযায়ী, যারা অল্প বয়সে বা বুদ্ধি-বিবেচনার আগেই মারা যায়—বিশেষ করে শিশু সন্তানরা—তাদের জান্নাতে রাখা হবে। তারা হবে নিষ্পাপ, কারণ তারা গুনাহ করার বয়সে পৌঁছায়নি। হাদীস অনুযায়ী, এ শিশুরা কিয়ামতের দিন জান্নাতে যাবে এবং তারা তাদের মা-বাবার জন্য সুপারিশ করবে। মহান আল্লাহ তাদের সে সুপারিশ কবুল করবেন, যদি মা-বাবা ধৈর্য ধরে সবর করে থাকেন। তাদের অবস্থান জান্নাতে হবে সম্মানিত, শান্তিময় এবং নেয়ামতে ভরপুর। সন্তান হারানো অসহনীয় হলেও, ইসলাম একজন মুমিনকে সেই দুঃখকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করার শিক্ষা দেয়। সবরের মাধ্যমে শুধু পাপ মোচনই হয় না, জান্নাতে স্থায়ী মর্যাদাও লাভ করা যায়। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে এই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার তাওফিক দেন। এনএইচ/ |