মহিলা মাদরাসাগুলোকে বেফাকের অধীনে সুসংগঠিত করতে হবে: মুফতি আশরাফুজ্জামান
প্রকাশ: ১৫ জুলাই, ২০২৫, ০৮:৪৮ রাত
নিউজ ডেস্ক

কওমি মহিলা মাদরাসাগুলোর শৃঙ্খলা, মানোন্নয়ন এবং সংগঠিত কার্যক্রমকে বেফাকের আওতায় আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া সাত মসজিদ মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মুফতি আশরাফুজ্জামান।

তিনি বলেছেন, “সমাজের নারীদের কুরআন ও দ্বীনের শিক্ষা দানে কওমি মহিলা মাদরাসাগুলো বিশাল ভূমিকা রেখে চলেছে। এদের আরও অধিকসংখ্যককে বেফাকের অধিভুক্ত করে সুসংগঠিত করতে হবে। তবেই এই খেদমত আরও গতিশীল হবে।”

সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর মিরপুর-২ এ অবস্থিত মাদরাসাতুল কুরআন লিল বানাতে শিক্ষার মানোন্নয়নবিষয়ক এক বিশেষ মজলিসে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরজাবাদ মাদরাসার মুহতামিম ও ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া, মিরপুর-এর সভাপতি মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া। তিনি বলেন, দেশের কওমি মহিলা মাদরাসাগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়ন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা কেবল ধর্মীয় জ্ঞানেই পারদর্শী না হয়, বরং আদর্শ নাগরিক ও ইসলামের যোগ্য খাদেম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে কওমি মাদরাসাগুলোর ভূমিকা দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাই এসব প্রতিষ্ঠানকে সমাজের বাস্তব প্রয়োজন, সময়ের চাহিদা ও ইসলামি মূল্যবোধের সমন্বয়ে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা অপরিহার্য।

অনুষ্ঠানে মাদরাসাতুল কোরআন লিল বানাতের মুহতামিম ও জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া সাত মসজিদের সিনিয়র শিক্ষক মুফতি সাঈদ আহমদ বলেন, “আমরা আমাদের মেয়েদের শুধু কুরআন শেখাই না; বরং তাদের এই প্রেরণাও জোগাই যেন তারা একেকজন হয়ে উঠতে পারে হাজারো নারীর শিক্ষাদাত্রী। তারা এই সংকল্প নিয়েই দ্বীন শিক্ষা গ্রহণ করে।”

নারীদের দ্বীন শেখানোর গুরুত্ব তুলে ধরে মুফতি সাঈদ বলেন, “ইসলাম নারীকে যে অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে, তা আমরা পুরুষেরা বলি, কিন্তু নারীরা বলতে পারে না। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভোগে। আমরা চাই তারা যেন দ্বীন শিখে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয় এবং পশ্চিমা এজেন্ডার দাঁতভাঙা জবাব দিতে পারে।”

মজলিসে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামিয়া শারঈয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, “মেয়েদের ইসলামি শিক্ষার দুর্গ হলো মহিলা মাদরাসা। এর মধ্যে আদর্শিক একটি প্রতিষ্ঠান মাদরাসাতুল কোরআন লিল বানাত, যার খেদমত দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ুক—এটাই আমাদের কামনা।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন: জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি শফিকুল ইসলাম, জামিয়া ইসলামিয়া মাযহারুল উলূমের মুহতামিম মাওলানা লোকমান মাযহারী, জামিউল উলূম মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি সিফাতুল্লাহ, সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা রুহুল আমীন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. শহীদুল ইসলাম ফারুকী, মা'হাদুস সুফফার পরিচালক শায়খ আরিফুর রহমান আযহারী, শায়খ লুতফে রব্বী আফনান আল আযহারী।

মজলিসে বক্তারা কওমি মহিলা মাদরাসাগুলোর ভূমিকাকে সময়োপযোগী, প্রয়োজনীয় ও অনন্য বলে উল্লেখ করেন এবং আরও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এমএইচ/