রাজনীতিতে শিষ্টাচার লঙ্ঘন করলে পতিত শক্তি সুযোগ নেবে: পীর সাহেব চরমোনাই
প্রকাশ:
১৫ জুলাই, ২০২৫, ০৭:৩১ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগীতা ও প্রতিদ্বন্দ্বীতা থাকে এবং সেজন্যই পরস্পর সমালোচনা থাকে। কখনো কখনো তা তীব্রও হতে পারে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই সীমালঙ্ঘন করা উচিত নয়। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন। মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ১৫ বছরের পতিত ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছোঁয়া এখনো দেশকে অনিরাপদ করে রেখেছে। পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করে সুযোগ নেয়ার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ দলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে একই সাথে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমালোচনায়, বক্তব্যে ও মন্তব্যে শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ কোন অবস্থাতেই পতিত ফ্যাসিবাদকে কোন সুযোগ করে দেয়া যাবে না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, ৫ আগষ্টের পরে দেশ গঠনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন বলে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। সেই সংস্কার হতে হবে রাষ্ট্রের কাঠামোতে, আইনে এবং রাজনৈতিক দলের চরিত্র ও সংস্কৃতিতে। রাষ্ট্রের কাঠামো ও আইনী সংস্কারের কাজ কিছুটা অগ্রগতি হলেও রাজনৈতিক চরিত্র ও সংস্কৃতিতে তেমন কোন পরিবর্তন আসে নাই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগষ্টের পরে রাজনৈতিক হানাহানিতে নিহত-আহত মানুষের সংখ্যা শুনে আঁতকে উঠতে হয়। চাঁদাবাজী কোন অর্থেই কমে নাই। সন্ত্রাসও কমে নাই। বরং রাজনৈতিক পরিচয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মিডফোর্ট হত্যাকণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মিডফোর্ট হাসপাতালের সামনে যে বর্বরতায় মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে জনতা ফুঁসে উঠেছে স্বাভাবিক কারণেই । জনতার সেই প্রতিবাদকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে বর্বর সেই হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করে ফেলা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে মানুষ এই ধরণের রাজনীতি দেখতে চায় না। এই ধরণের অপরাধের সাথে জড়িতদের একটা বড় অংশ বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিএনপি কর্তৃক তাদের বহিস্কারের মাধ্যমে এটা প্রমানিতও বটে। মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বিএনপি নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কর্মীদের অপরাধের দায়ভার দল হিসেবে আপনাদের বহন করতেই হবে। চাঁদাবাজরা বিএনপির সাথে সম্পৃক্ততা দেখিয়েই জনতার কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে। তাই জনতার ক্ষোভ বিএনপির প্রতি হবে এটা স্বাভাবিক। জনতার এই প্রতিবাদকে প্রতিপক্ষ না বানিয়ে দলের ভেতরে থাকা অপরাধীদের চিহ্নিত করুন। অপরাধ ঘটার আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। প্রকাশ্যে একজন মানুষকে পিশাচের নির্মমতায় হত্যা করার পরে আপনি জনতার কাছ থেকে মার্জিত ক্ষোভ আশা করতে পারেন না। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরে গতকাল (১৪ জুলাই) ছিলো দেশের রাজনীতির জন্য সবচেয়ে কলংকজনক। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সর্বদা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর কিন্তু মার্জিত সমালোচনা করে আসছে। তিনি বলেন, আমাদের দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর তার এক বক্তব্যে বিএনপির প্রতি পরামর্শ হিসেবে বলেছেন, এই এই শ্লোগান মানুষ দিচ্ছে। আপনারা সতর্ক হোন। তার সেই বক্তব্য খন্ডিত আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এবং সেই খন্ডিত বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দেশের ঐতিহাসিক সুফি ও সংস্কার ধারা চরমোনাইকে কেন্দ্র করে রাজপথে নোংরা শ্লোগান দেয়া হয়েছে। চরমোনাই এর মতো একটি আধ্যাত্মিক ধারাকে শায়েস্তা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বিএনপির মঞ্চ থেকে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও এনসিপিকে কেন্দ্র করে পতিত ফ্যাসিবাদের ভাষায় ও ঢংয়ে শ্লোগান দেয়া হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। রাজনীতিকে এভাবে কলুষিত করা এবং প্রতিহিংসা পরায়ণ করা বিএনপির মতো দলের পক্ষে শোভা পায় না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বিগত দশমাসের আইন-শৃঙ্খলা পরিসংখ্যানকে ভয়াবহ আখ্যা দিয়ে বলেন, সরকার কেন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না তা জাতীকে ব্যাখ্যা করতে হবে। কোন অদৃশ্য শক্তি যদি সমস্যা তৈরি করে তাহলে তা মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু আমাদের গৌরবান্বিত সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারসহ মোতায়েন থাকা অবস্থায় রাজনীতির এই পরিবেশ মেনে নেয়া যায় না। এমএইচ/ |