সফেদা: পুষ্টিগুণে ভরপুর ঘরোয়া ফল
প্রকাশ: ২৪ জুন, ২০২৫, ১০:১৩ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান

সফেদা আমাদের দেশীয় ফলের তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। সুপরিচিত না হলেও এটি যেমন খেতে সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে একে সবেদা নামেও ডাকা হয়। মাটি ও আবহাওয়ার উপযোগী হওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এবং পার্বত্য এলাকায় সফেদার চাষ ক্রমশ বাড়ছে।

ফলের বৈশিষ্ট্য

সফেদা দেখতে বাদামি রঙের, গোলাকৃতি বা ডিম্বাকৃতির হয়। এর ভেতরের অংশ কোমল ও মিষ্টি স্বাদের। ফলটি পাকা অবস্থায় খাওয়া হয়, তবে এর কাঁচা অংশ টক ও কষযুক্ত। সাধারণত একটি সফেদার ভেতরে ৩-৬টি কালো বিচি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, ১০০ গ্রাম সফেদায় আছে ৮৩ ক্যালরি, ৩.৯ গ্রাম মিনারেল, ৫.৬ গ্রাম ফাইবার, প্রথম গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ১৪.৭ গ্রাম ভিটামিন। সফেদা গাছের ছাল ও পাতা সমান উপকারী। গবেষণায় প্রমাণিত, সফেদার পাতা ঠান্ডাজনিত অসুখ কমাতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্য উপকারিতা

সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যতন্তু, ভিটামিন এ, সি এবং বি কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই প্রত্যেকটা উপাদানই শরীরের জন্য দরকারি। ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। খাদ্যতন্তু হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। সফেদার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সফেদায় থাকা পটাশিয়াম হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। সফেদার ভিটামিন ও খনিজ উপাদান ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। নিয়মিত সফেদা খেলে ওরাল ক্যান্সার প্রতিরোধ ও দাঁত ভালো থাকে। সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস যা হাড়ের গঠন মজবুত করে। সফেদা নিয়মিত খেলে স্থূলতা জনিত সমস্যার সমাধান হয়।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা

দেশীয় বাজারে সফেদার চাহিদা ক্রমবর্ধমান। অল্প পরিচর্যায় ফলন ভালো হওয়ায় এটি চাষিদের জন্য একটি লাভজনক ফল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন ও রপ্তানির সুযোগও রয়েছে।

সফেদা শুধু একটি মিষ্টি ফল নয়, বরং এটি আমাদের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এর চাষ ও সংরক্ষণে যথাযথ উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশের ফল উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।

এনএইচ/