ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র যে অস্ত্র ব্যবহার করেছে: "বি-২ স্পিরিট" বোমারু বিমান
প্রকাশ: ২২ জুন, ২০২৫, ১২:৪৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

বিশেষ প্রতিবেদন:

রবিবার ভোরে, যুক্তরাষ্ট্রের "বি-২ স্পিরিট" নামক অত্যাধুনিক বোমারু বিমান ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় (ফোর্ডু, নাতানজ ও ইসফাহান) হামলা চালিয়েছে। বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে উন্নত কৌশলগত বোমারু বিমান হিসেবে পরিচিত "বি-২ স্পিরিট" ব্যবহার করা হয়েছে এমন একটি অভিযানে, যা বিশেষভাবে দূরবর্তী ও সুরক্ষিত স্থানে অভিযান পরিচালনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

১৯৮৯ সালে চালু হওয়া "বি-২ স্পিরিট" বিমানটি এমন এক স্টেলথ প্রযুক্তি সম্পন্ন বিমান, যা রাডারের চোখে ধরা পড়ে না এবং থার্মাল সেন্সর থেকেও অগোচরে থাকে। এর গোপনীয়তা, শক্তিশালী জ্যামিং সিস্টেম এবং দীর্ঘ পাল্লার ক্ষমতা এটিকে অনন্য করে তুলেছে। বর্তমানে বিশ্বের ১৯টি সক্রিয় "বি-২ স্পিরিট" বিমান রয়েছে, এবং প্রতি বিমানের মূল্য প্রায় ২.১ বিলিয়ন ডলার।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলির অধিকাংশই ভূগর্ভে সুরক্ষিত, যার জন্য বিশেষ ধরনের ভারী বোমা প্রয়োজন। "বি-২ স্পিরিট" তার বহনযোগ্য GBU-57 বোমা দিয়ে এই গভীরে প্রবেশ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। বিমানটি একাই অভিযান পরিচালনা করতে পারে, এবং অন্য কোনো বিমানের সুরক্ষার প্রয়োজন হয় না, যা পুরনো "বি-৫২" বিমানের ক্ষেত্রে সম্ভব ছিল না।

এই অত্যাধুনিক বিমানটি অতীতে কসোভো যুদ্ধ, আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধ, লিবিয়া অভিযান (২০১৭) সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। সম্প্রতি, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় এটি আবারও তার কৌশলগত শক্তি প্রমাণ করল।

এমন একটি হামলা ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে, বিশেষ করে পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি আঘাত হানায় আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে পারে। এর ফলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে এবং এ ধরণের হামলার প্রভাব বৈশ্বিক রাজনীতিতে গভীর চিহ্ন রেখে যেতে পারে।
"বি-২ স্পিরিট" এখন আরও একবার প্রমাণ করল যে, এটি শুধু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রতিনিধিত্ব নয়, বরং বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও কার্যকর যুদ্ধবিমানগুলোর একটি।

এসএকে/