কোরবানির পশুর যেসব বিষয় জানতেই হবে
প্রকাশ:
২৮ মে, ২০২৫, ০৯:৪৭ সকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
কোরবানির মতো মহৎ বিধান পালন করতে গিয়ে পশু ক্রয় ও জবেহের অনেক ক্ষেত্রে আমরা সঠিক পন্থা অবলম্বন করি না। এ প্রবন্ধের মাধ্যমে কোরবানির প্রস্তুতি ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব— ১. চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি নয় কোরবানির পশু ক্রয়ের ক্ষেত্রে রাসুল (সা.) নির্দেশিত নিম্নোক্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে খেয়াল করতে হবে। আবু জাহহাক উবায়দ (রহ.) বলেন, আমি বারা (রা.)-কে বললাম : যেসব পশু কোরবানি করতে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন, তা আমার কাছে বর্ণনা করুন। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) (খুতবা দিতে) দাঁড়ালেন, আর আমার হাত তাঁর হাত অপেক্ষা ছোট।
ঈদের নামাজের আগে কোরবানির পশু জবেহ করার সুযোগ নেই। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পূর্বে জবেহ করল, সে নিজের জন্যই জবেহ করল। আর যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পরে জবেহ করল, তার কোরবানি পূর্ণ হলো এবং সে মুসলিমদের নীতি গ্রহণ করল। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৪৬) কোরবানি দাতাদের নিজ হাতে আল্লাহর নামে পশু জবেহ করা উত্তম। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি তাঁকে অর্থাৎ নবী (সা.)-কে তা নিজ হাতে জবেহ করতে দেখেছি।
অনেকে অব্যবহৃত ও ধারহীন ছুরি ব্যবহার করে পশুকে কষ্ট দিয়ে জবেহ করে থাকে। আবার কেউ পশুর সামনেই ছুরি ধার দেয়। জবেহের পরে কসাই ভাইয়েরা তাড়াহুড়া করে প্রাণ না যেতেই চামড়া খসানো শুরু করে থাকে, যা অত্যন্ত অমানবিক। রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ প্রত্যেক বস্তুর প্রতি সদয় আচরণ ফরজ করেছেন।
কোরবানিদাতা পশু জবেহের পর তার কোরবানি যেন আল্লাহ কবুল করেন সেই দোয়া করবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কোরবানি করার জন্য শিংওয়ালা দুম্বা আনতে নির্দেশ দেন। সেটি আনা হলে... তিনি দুম্বাটি ধরে শোয়ালেন, জবেহ করলেন এবং বলেন : ‘বিসমিল্লাহ। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার ও তাঁর উম্মতের পক্ষ থেকে এটা কবুল করে নাও।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯৬৭) ৬. কোরবানির গোশত নিজে এবং অন্যকে খাওয়াবে কোরবানির গোশত বণ্টনের ক্ষেত্রে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের নির্দেশনা হচ্ছে, আল্লাহ বলেন : ‘অতঃপর তোমরা উহা (কোরবানির গোশত) হতে আহার করো এবং দুস্থ, অভাবগ্রস্থকে আহার করাও।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৮) রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরবানির গোশত সম্পর্কে বলেছেন, ‘তোমরা (কোরবানির গোশত) নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং জমা করে রাখো।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯৭৩) ‘খাওয়াও’ শব্দ দ্বারা অভাবগ্রস্ত ও আত্মীয়দের দান করা বোঝানো হয়েছে। পশু জবেহ করার নামই কোরবানি নয়, বরং মানুষের ভেতরে যে পৈশাচিক ও পশুত্বের স্বভাব আছে সেগুলোকে কোরবানি করতে পারলেই কেবল কোরবানির মহিমা, ত্যাগ ও তাৎপর্যের পূর্ণ অনুসরণ করা হবে। কোরবানির গোশত নির্দেশিত সবার মধ্যে বিতরণ না করাটা খুবই লজ্জাজনক কাজ। এতে হৃদয়ের সংকীর্ণতা ও কৃপণতা প্রকাশ পায়। কারণ কোরবানির মাধ্যমে কোরবানিদাতা অহংকার থেকে মুক্ত হন এবং তাঁর অন্তর পরিশুদ্ধি লাভ করে । এনএইচ/ |