
| 	
        
			
							
			
			  ৩৫৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল ১৭ ছাপাখানা!  
			
			
	
			
										প্রকাশ:
										২৪ মে, ২০২৫,  ০৮:২৪ সকাল
					 
			
			
			
			নিউজ ডেস্ক  | 
		
			
			
			
			
			 
	   
	      
 ইন্সপেকশন এজেন্ট বা মান যাচাইকারী কোম্পানিগুলোকে ম্যানেজ করে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বিনা মূল্যের পাঠ্যবই নিম্নমানের কাগজে ছাপিয়ে ৩৫৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক শ্রেণির ছাপাখানা। এ পর্যন্ত এমন ১৭টি ছাপাখানাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সেগুলোর মালিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি। তাদের বিল আটকে দেওয়াসহ কালো তালিকাভুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে।   
 এ ব্যাপারে এনসিটিবির সদ্য অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান গত ফেব্রুয়ারি মাসে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে ইত্তেফাককে বলেন, ‘মান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিনা পয়সাও ইন্সপেকশন করতে চান।’ অভিযোগ আছে, প্রতিটি ইন্সপেকশন কোম্পানি ছাপাখানার মালিকদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা ঘুষ নেন। এ কারণে তারা সব পজিটিভ রিপোর্ট দেন। বই ছাপার আগে তিন স্তরে তদারকির কথা পরিদর্শন এজেন্সির। প্রথমে প্রেসে কাগজের মান (স্থায়িত্ব ও জিএসএম) ঠিক আছে কি না, তা দেখে ছাড়পত্র দেবে, ছাপা ও ডেলিভারির আগে বইয়ের মান দেখে ছাড়পত্র দেবে। এই স্তরকে পিডিআই বলে। 
 এনসিটিবির কর্মকর্তারা বলেন, চলতি বছর বইয়ের মান ঠিক রাখতে তিনটা পরিদর্শন এজেন্সি ছাড়াও এনসিটিবির কর্মকর্তারা মাঠে ছিলেন। এত তদারকির পরও নিম্নমানের বই গেছে স্কুলে। নিম্নমানের কাগজে ছাপানো প্রাথমিকের বইয়ের সংখ্যা তুলনামূলক কম। তবে কাগজের পুরুত্ব ও ব্রাইটনেস মানা হলেও প্রাথমিকের অনেক বইয়ে বার্স্টিং ফ্যাক্টর মানা হয়নি। অন্যদিকে মাধ্যমিকের বই বেশি নিম্নমানের। কাগজের পুরুত্ব, ব্রাইটনেস ও বার্স্টিং ফ্যাক্টর কোনোটাই মানেনি। ছাপাখানার মালিকরা প্রতিবারের মতো এবারও কৌশলে জেলা সদর ও উপজেলা শহর ছাড়া মফস্বল এলাকায় নিম্নমানের বই দিয়েছে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে এবার জেলা সদর ও উপজেলা সদর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। সারা দেশের মফস্বল এরিয়া থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, এতে বেশি নিম্নমানের বই শনাক্ত হয়েছে। এবার এনসিটিবির মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের পিডিআই এজেন্টের দায়িত্ব পালন করেছে ‘ব্যুরো ভ্যারিটাস’। প্রাথমিক স্তরের বইয়ের পিডিআই ও পিএলআই এজেন্ট কোম্পানি হলো ‘ফিনিক্স’। ব্যুরো ভ্যারিটাস নামক কোম্পানি এবারই প্রথম মাত্র ৩২ লাখ টাকাতে মাধ্যমিকের কাজ করে, যা গত ১০ বছরে এত কম মূল্যে কেউ করেনি। প্রায় সব মান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানই লো টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে কাজ পাওয়ার জন্য। পরবর্তীতে অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। অন্যদিকে বই ছাপার পর মান যাচাইয়ের জন্য হাইটেক সার্ভে বিডি নামে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ঐ প্রতিষ্ঠানটিও মাঠপর্যায় থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করাচ্ছে। হাইটেক সার্ভে বিডির স্বত্ব্বাধিকার মো. বিপ্লব ইত্তেফাককে বলেন, সারা দেশে নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে। নিম্নমানের পাঠ্যবই সরবরাহ করেছে এমন ১৭টি ছাপাখানা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের কাছে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা গতকাল বলেন, বইয়ে ভুলত্রুটি হলে সেটির দায় ইন্সপেকশন কোম্পানির। মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের এত সংস্থা ও এজেন্সির তদারকির পরও নিম্নমানের বই সরবরাহ হওয়ার মানে বুঝতে হবে ‘সর্ষের মধ্যে ভূত’ আছে। এ ব্যাপারে এনসিটিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সূত্র/ইত্তেফাক এনএইচ/  |