দরুদ পাঠে সুরভিত হোক মুমিনের জীবন
প্রকাশ:
২২ মে, ২০২৫, ০৫:৫৭ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
|| আব্দুল্লাহ আলমামুন আশরাফী || রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরুদ পাঠ করা আল্লাহ তায়ালার কাছে খুবই প্রিয় একটি আমল। এতে করে আল্লাহ ও বান্দার মাঝে এক গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। দরুদ পাঠ আল্লাহর নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরুদ প্রেরণ করা আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ। إن الله وملآئكته يصلون علي النبي. يا أيها الذين آمنوا صلوا عليه وسلموا تسليما অর্থাৎ, নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরুদ পাঠান। হে মুমিনগন! তোমরাও তার প্রতি দরুদ পাঠাও এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও। (সূরা আহযাব: ৫৬) আল্লাহ তায়ালা এই আয়াতে সুস্পষ্টভাবে মুমিনদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই প্রত্যেক মুমিনের জন্যে অবশ্য পালনীয় হচ্ছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি হৃদয়ের সবটুকু আবেগ ও ভালোবাসা উজাড় করে দরুদ পাঠ করা।
দরুদ পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন। দরুদ পাঠকারীর উপর তিনি রহমত বর্ষণ করেন। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তার প্রতি দশবার রহমত নাজিল করেন"।(সহীহ মুসলিম:৪০৮) নবীজীর নৈকট্য অর্জনের সুযোগ দরুদ পাঠের মাধ্যমে কিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছাকাছি থাকার সৌভাগ্য অর্জিত হবে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,أولي الناس بي يوم القيامة أكثرهم علي صلاة অর্থাৎ, কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে যে আমার উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করে। (জামে তিরমীযী :৪৮৪)
জুমার দিন বেশী বেশী দরুদ পাঠ করার প্রতি উৎসাহিত করেছেন এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হযরত আউস ইবনে আউস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, إن من أفضل أيامكم يوم القيامة فأكثروا علي من الصلاة فيه অর্থাৎ, তোমাদের দিনসমূহের মাঝে শ্রেষ্ঠ দিন হচ্ছে জুমার দিন। এ দিন তোমরা বেশি বেশি করে আমার প্রতি দরুদ পাঠ কর। (সুনানে আবু দাউদ :১৫৩১)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র নাম উচ্চারিত হলে দরুদ শরীফ পড়া প্রতিটি মুমিনের প্রতি ভালোবাসার দাবি। একজন মুমিন তার প্রেমাস্পদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম শুনলেই একবুক ভালোবাসা নিয়ে দরুদ পাঠ করবে এমনটাই কাম্য। কিন্তু নবিজীর নাম শুনেও যারা দরুদ পড়ে না তিনি তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন। তাদেরকে “কৃপণ” বলে অভিহিত করেন। হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, رغم أنف رجل ذكرت عنده فلم يصل علي “ঐ ব্যক্তির নাক ধূলায় ধূসরিত হোক(ধ্বংস হয়ে যাক) যার কাছে আমার নাম উচ্চারিত হয় অথচ আমার উপর দরুদ পাঠ করে না।” (মুসতাদরাকে হাকেম: ২০৪২) রহমতে ভরা বরকতময় এই আমলটি আমাদের অভ্যাসে পরিণত হোক। যাপিত জীবনের বাঁকে বাঁকে আলোর দীপ্তি ছড়াক। দরুদপাঠে জীবন হোক সুরভিত। লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম টঙ্গী, গাজীপুর এমএইচ/ |